ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানী তেহরানের উপকণ্ঠে একটি তিনতলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি গোপন ড্রোন এবং বিস্ফোরক তৈরির কারখানার খোঁজ পেয়েছে, যা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালনায় ছিল বলে দাবি করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।ইরানের সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত রোববার ইরানি পুলিশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে ড্রোন তৈরির যন্ত্রাংশ, ধাতব কাঠামো, পাখা ও প্রযুক্তিগত উপাদান দেখা যায়। ইরান দাবি করছে, এসব সরঞ্জাম ওই বাড়িতে ড্রোন নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই বাড়িতে শুধু ড্রোন উৎপাদনই চলছিল না, বরং ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে নাশকতার উদ্দেশ্যেও এটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। অভিযানকালে বেশ কিছু যন্ত্রাংশ তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।এই তথ্য সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাক্সিওস ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের খবরে দাবি করা হয়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ দীর্ঘদিন ধরে ইরানের ভূখণ্ডে ড্রোন পাচার ও নাশকতার পরিকল্পনা চালিয়ে আসছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো।একই দিন, রোববার সকালে তেহরানের একটি সড়কে একটি সন্দেহভাজন ট্রাককে ধাওয়া করার ঘটনা ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এক ইরানি গোয়েন্দা কর্মকর্তা ট্রাকটিকে থামানোর জন্য পরপর গুলি ছুড়ে তা আটক করেন। ট্রাকের ভেতর থেকে উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন উদ্ধারের দাবি করা হয়।ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, তারা বর্তমানে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং দেশের অভ্যন্তরে সক্রিয় যেকোনো বিদেশি নেটওয়ার্ক ভাঙতে জোর অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল বহু বছর ধরে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছে এবং তাদের প্রতিহত করতে ইরান সদা প্রস্তুত।এর আগে গত শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েলের এক আকস্মিক হামলায় ইরানের একাধিক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হন। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিলেন। এই হামলার জবাবে ইরান পাল্টা আক্রমণে ফিলিস্তিন অধিকৃত এলাকায় এবং ইসরায়েলের বিভিন্ন সামরিক ও শিল্প স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।তেহরান, হাইফা এবং অন্যান্য শহরে চালানো এসব হামলায় ইসরায়েল মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে বলে দাবি করেছে ইরান।সূত্র: প্রেস টিভিআরডি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর