যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে, পাশাপাশি বর্তমানে ভর্তি থাকা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরও অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের সুযোগ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২২ মে) যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংস্থার সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (SEVP) সার্টিফিকেশন ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন।এ পদক্ষেপের পেছনে যুক্তি হিসেবে প্রশাসন দাবি করছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, ইহুদি-বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে। যদিও হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ এসব অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন, অবৈধ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।বিশ্ববিদ্যালয়টি এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আমরা আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সব রকম সহায়তা দেব।”প্রভাবশালী আইভি লিগ এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত ছিল, যা তাদের মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২৭ শতাংশ। ফলে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে।বিশ্লেষকদের মতে, এটি ট্রাম্প প্রশাসনের হার্ভার্ডের ওপর দীর্ঘদিনের চাপ প্রয়োগের অংশ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যখন নির্দিষ্ট বিদেশি শিক্ষার্থীদের তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন থেকেই ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাদের বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।ঘটনার পর বৃহস্পতিবার থেকেই হার্ভার্ড ক্যাম্পাসে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকে তাদের একাডেমিক ভবিষ্যৎ ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা নিয়ে গভীর উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে।এ পরিস্থিতিতে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষণা আদান-প্রদানের পরিবেশ এবং বৈশ্বিক শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত হার্ভার্ড এখন এক গভীর রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এই সিদ্ধান্ত কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, পুরো আন্তর্জাতিক শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর বড় ধাক্কা হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সূত্র: রয়টার্স এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর