বাংলা ১৪৩২ সালের জন্য যশোরের শার্শা উপজেলা পরিষদের নিয়মিত ২১টি হাট বাজার বার বার ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সত্বেও ১৫টি হাট বাজার কেউ ইজারা নেয়নি বলে জানা গেছে। যে কারনে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।সরকার হাট বাজার সমূহের ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১ মোতাবেক শার্শা উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন গত ৬ মার্চ তারিখ পর্যন্ত শার্শা উপজেলার অ-ইজারাকৃত ২১টি নিয়মিত হাটসমূহ ১ বৈশাখ হতে ৩০ চৈত্র ১৪৩২ বাংলা সাল পর্যন্ত অস্থায়ী ভাবে ইজারা প্রদানের নিমিত্তে আগ্রহী দরদাতার নিকট হতে শর্তসাপেক্ষে নির্ধারিত ফরমে সীলমোহরকৃত বন্ধ খামে দরপত্র আহবান করেন। এমন আহবানে শার্শা উপজেলা বড়বড় ৪টিসহ মোট ১৫টি হাটের কোন আবেদন পড়েনি। যে কারনে শার্শা উপজেলা পরিষদ কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। লাভবান হবে কতিপয় অসাধু একটি চক্র।জানা গেছে, বাংলা ১৪৩১ সালে শার্শা উপজেলা পরিষদের দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ সাতমাইল পশু হাট ইজারা হয়নি। বিগত বছরে যার ইজারা মূল্য ছিল প্রায় ৭ কোটি টাকা। বাগআঁচড়া সাধারন হাট যার ইজারা মূল্য ছিল প্রায় ৬৩ লক্ষ টাকা। নাভারন বাজার সাধারন হাট ইজারা মূল্য ছিল ২৫ লক্ষ টাকা, নাভারন পশু হাট ইজারা মূল্য ছিল প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা। হাটগুলো এ বছর নতুন করে কেউ ইজারা গ্রহন করেননি। এ ছাড়া শার্শা উপজেলার ২১টি হাটের মধ্যে শিকারপুর হাট, বাহাদুরপুর হাট, ধান্যখোলা হাট, বালুন্ডা হাট, রুদ্রপুর হাট , সাতমাইল পশু হাট, বাগআঁচড়া সাধারন হাট, ধলদা হাট, উলাশী হাট, যদুনাথপুর হাট, বড়বাড়িয়া হাট, নাভারন সাধারন হাট, নাভারন পশু হাট, শার্শা সাধারন হাট ও গোড়পাড়া হাটের কোন ইজারা হয়নি। বাকি ছোট ছোট ৬টি হাটের ইজারা হয়েছে।জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর গত ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে কতিপয় ব্যক্তি উপজেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে হাটের ইজারা আদায় করছে। আদায়কৃত ইজারার কিছু অংশ সরকারের কোষাগারে জমা পড়লেও সিংহ ভাগ ইজারার টাকা কিছু ব্যক্তির পকেটে চলে যাচ্ছে।শার্শা উপজেলার ইজারাকৃত হাট এলাকার একাধিক উপকারভোগিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগের থেকে কঠোর ভাবে রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতাদের নির্দেশে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ইজারা আদায়ের সাথে জড়িত।অপরদিকে সরকারের প্রায় ৭ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের সাতমাইল পশু হাট ইজারা না হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে শার্শা উপজেলা পরিষদ। সাতমাইল পশু হাট থেকে প্রতি হাটে প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ও বেশি ইজারা আদায় হয়ে থাকে। যা ভাগ বাটোয়ারা হয় প্রভাবশালী একটি মহলের নেতা কর্মিদের মধ্যে।আরও জানা গেছে, বিগত আওয়ামীলীগের আমলে শার্শার সাবেক প্রভাবশালী এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের নির্দেশে শার্শার বড়বড় হাট সরকারি ভাবে ইজারা না দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার লোকদের দিয়ে হাটের ইজারা আদায় করত। ঠিক তেমনি ভাবে বর্তমান সময়ে কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি শেখ আফিলের পথ অনুসরন করে শার্শার বড় বড় হাট সরকারি ভাবে ইজারা না নিয়ে একটি সিস্টেমের মাধ্যমে ইজারা আদায় করছে।এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলার একাধিক রাজনৈতিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর যাদের দিকে সাধারন মানুষ তাকিয়ে ছিল সেই সব নেতাদের দখলদারিত্বে সাধারন মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। যে কারনে আগামী নির্বাচনে দলের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. কাজী নাজিব হাসান জানান, যে সব হাট নতুন করে কেউ ইজারা নেয়নি সে সব হাট গুলো আবারো পত্রিকার মাধ্যমে ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, শার্শার বড় বড় হাটসহ সাতমাইল পশুহাট ও বাগআঁচড়া সাধারন হাট ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারার আহবান করলেও কোন ব্যক্তি ইজারা নেননি। তিনি জানান, নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা না হওয়া হাট গুলো পূনরায় ইজারার আহবান করা হবে। এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর