গাজীপুরের সদর উপজেলার বাগেরবাজার এলাকায় পুষ্পদামে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ৪ জন যুবক ও ৫ জন যুবতীকে আটক করেছে জয়দেবপুর থানা পুলিশ। বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে অভিযানে ধরা পড়া একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের সদস্যকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসমাইল নামে ওই পুলিশ সদস্যকে ঘটনাস্থল থেকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে অভিযানের নেতৃত্বদানকারী এসআই হাদিউল বলেন, “আমার এমন কোনো তথ্য জানা নেই। আমি কোনো পুলিশ সদস্যকে ছেড়ে দিইনি।২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে রিসোর্টটির একজন কর্মচারী আলীর সঙ্গে পরিচয় গোপন করে কথা বলেন কয়েকজন সংবাদকর্মী। তখন আলী জানান, ‘প্রতি রাতে রুম ভাড়া ৫০০০ টাকা। মেয়ে তারা দিলে আরও ৪০০০ টাকা। দিনের বেলায় যদি কেউ কম সময় থাকে তাহলে মেয়ে তারা দিলে তাদের রেট ৭০০০ টাকা। এছাড়া কেউ প্রেমিকা নিয়ে আসলে প্রতি ঘন্টায় ২০০০ টাকা করে নিচ্ছে তারা’। প্রশাসনিক ঝামেলা আছে কি না ? জানতে চাইলে একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে ডিবি এবং থানা পুলিশকে এক লাখ টাকা করে দিচ্ছে। তাই কোনো পুলিশি ঝামেলাও নেই’। স্থানীয় বাসিন্দা হাজী মোহাম্মদ আবদুল আজিজ বলেন, রিসোর্টে অবৈধ কার্যকলাপ চলায় এলাকায় মাদকসেবিদের আনাগোনা বেড়েছে। সেই সাথে ভাসমান পতিতা-দের আনাগোনাও রয়েছে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এবং উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরাও জড়িয়ে পড়ছে রিসোর্টের পাতা ভয়াবহ ফাঁদে। ফলে এই এলাকায় সামাজিক অবক্ষয় ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, এলাকায় বহিরাগত খদ্দের বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। চুরির ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। বহিরাগত মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। আমরা নিরাপত্তা চাই। এসব খারাপ কাজ বন্ধ হলে আমরা স্বস্তি পেতাম। এলাকার সচেতন মহল পুষ্পদাম রিসোর্টের অসামাজিক কার্যকলাপ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা মামুন মিয়া বলেন, ‘রিসোর্টটিতে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হয়েছে। মামলাও হয়েছে। তবুও বন্ধ হয়নি অসামাজিক কার্যকলাপ। এর আগে সর্বশেষ ‘২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪’ তারিখে পুলিশ অভিযান চালায়। ওই অভিযানের পরদিন থেকে পেছনের একটি টিনের গেইট দিয়ে যুবক-যুবতীদের প্রবেশ করাচ্ছে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। অভিযানের খবর পেলে অথবা মূল ফটক দিয়ে সন্দেহভাজন অথবা প্রশাসনের কেউ প্রবেশ করলে পেছনের গেইট দিয়ে যৌনকর্মী ও খদ্দেরদের নিরাপদে বের করে দেয়া হয়। প্রশাসন ও গণমাধ্যমের কিছু লোকজন পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় অভিযানের খবর আগে থেকে জেনে যায় কর্তৃপক্ষ’।সার্বিক বিষয়ে পুষ্পদাম রিসোর্টের মালিক শামসুল আলম চৌধুরীকে সন্ধ্যায় মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, “অভিযান সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়েছে। কোনো পুলিশ সদস্যকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ এখনো পাইনি। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, আমরা অবশ্যই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর