লক্ষীপুরে হত্যা চেষ্টা মামলায় যুবলীগ ক্যাডার আশরাফ উদ্দিন আরজুর পক্ষে দায়সারা তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে। এজাহারে উল্লিখিত ঘটনার কোনো বাস্তব প্রমাণ না মিললেও, এসআই মোস্তফা সুষ্ঠু তদন্তের পথে না হেঁটে থানায় বসেই জমা দিয়েছেন মনগড়া একটি প্রতিবেদন। এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে প্রশ্ন উঠেছে তদন্ত প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ও পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে। অভিযোগ উঠেছে, ৪ আগষ্ট লক্ষীপুরে ছাত্র হত্যা মামলার আসামি, পৌর যুবলীগের প্রচার সম্পাদক আরজুর সঙ্গে ‘সখ্যতা’ এবং আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে তিনি প্রভাবিত হয়ে এই প্রতিবেদন দিয়েছেন, যা ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পক্ষের।এজাহার সূত্রে জানাযায়, ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর যুবলীগ নেতা আরজুর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস বাদি হয়ে লক্ষীপুর সদর থানায় একটি সিআর মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর-১৬৫৫/২০২৪। মামলায় উল্লেখ করা হয় বাদি জান্নাতুল ফেরদাউস তার স্বামীর মাছের প্রজেক্টের জন্য বেসরকারি ক্ষুদ্রঋণ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে ০৮ আগস্ট ৫ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন এবং সেই টাকা তার স্বামীর মাছের খামারে বিনিয়োগ করেন। পরবর্তীতে আকষ্মিক বন্যায় পুকুরের পাড় ভেঙে ২০ লক্ষ টাকার মাছ চলে যায়। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ০৩ অক্টোবর সকাল ১০টায় এনজিওর লোকজন তার ওপর হামলা করে বটি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে এবং তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। পরে তাঁর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। উক্ত মামলায় নিজ পরিবারের লোকজনকেই সাক্ষী হিসেবে এজাহারে যুক্ত করেন বাদি। এই মামলার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই মোস্তফাকে। যিনি যুবলীগের প্রচার সম্পাদক আরজুর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এর আগে ঋণ নেওয়ার সংক্রান্ত চেকের পাতার বিষয়ে আরজু একটি পিটিশন মামলা দায়ের করলে আরজুকে সঙ্গে নিয়ে আম্বালা ফাউন্ডেশনের ব্রাঞ্চে গিয়ে অফিস তছনছ করে চেক উদ্ধার করেন। এবং এনজিওর লোকজনকে নানা হুমকি ধামকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঋণের ০৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করতে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের পরিকল্পিতভাবে একের পর এক সাজানো মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টায় মাতেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঞ্ছানগর গ্রামের দেওয়ানবাড়ির আক্কাস দুলালের ছেলে আশরাফ উদ্দিন আরজু (৪০) ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস (২৯)। বর্তমানে তারা উত্তর মজুপুর এলাকায় নতুন বসতবাড়িতে বসবাস করছেন। প্রতারক এই দম্পতি ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কয়েকদিনের ব্যবধানে করেছেন ছয়টি মামলা! যেখানে একটি মামলায় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালককেও আসামি করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, বাদির স্বামী আরজুর সাথে আতাত করে ঘটনার সঠিক অনুসন্ধান না করে আম্বালা ফাউন্ডেশনের লক্ষ্মীপুর সদর ব্রাঞ্চের নিরাপরাধ লোকজনকে অভিযুক্ত করে এজাহারে উল্লেখিত তথ্য দিয়েই সম্প্রতি লক্ষীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিট্রেট আমলি আদালতে প্রতিবেদন পেশ করেছেন এসআই মোস্তফা! স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার আগে বাদি আরজুর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদাউসের সঙ্গে একাধিকবার থানায় ‘আলোচনা’ করতে দেখা গেছে এসআই মোস্তফাকে। পরবর্তীতে আরজু ছাত্রহত্যা মামলায় জেলে থাকা অবস্থায়ও জান্নাতুল ফেরদাউস একাধিকবার থানা ও থানার বাইরে মোস্তফার সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সুবিধা দিয়েছেন। জানাযায়, অভিযুক্ত এসআই গোলাম মোস্তাফার বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জে। যার ফলে বিগত সময়ে  ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে সখ্যতার সুযোগে গত দীর্ঘদিন ধরে লক্ষীপুর জেলায় কর্মরত রয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রথমে রায়পুর থানায় যোগদান করে দীর্ঘ কয়েক বছর থাকার পর মাঝে কিছুদিন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, পরে চাঁদপুরের কচুয়া, ফেনীর ফুলগাজী হয়ে ২০২৩ সালের মার্চে লক্ষীপুর সদর থানায় বদলি হয় তাঁর। এরপর থেকে দীর্ঘ ২ বছর ধরে একই থানায় কর্মরত রয়েছেন ‘আওয়ামী প্রেমী’ এই পুলিশ কর্মকর্তা।  এদিকে ০৫ আগস্ট সরকারের পটপরিবর্তনের পর থেকে পুলিশ বাহিনীতে ব্যাপক রদবদল শুরু হলেও এসআই মোস্তফা একই থানায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন। যা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন একই এলাকায় দায়িত্ব পালন করলে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে, যা তদন্ত ও আইন প্রয়োগে পক্ষপাত সৃষ্টি করতে পারে। হয়তো সেটিই হয়েছে এখানে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একই জেলায় দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করার ফলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে এক ধরনের ‘সিন্ডিকেট’ গড়ে উঠেছে এসআই মোস্তফার। তারই ধারাবাহিকতায় যুবলীগ নেতা আরজুর সঙ্গে মোস্তফার সখ্যতা। আর এ সখ্যতাকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী সরকারের আমলে অনেক নিরীহ মানুষকে হয়রানি করেছে আরজু। হাসিনা সরকারের পতন হলেও আরজুর সঙ্গে যে সম্পর্কের কোনো ভাটা পড়েনি এসআই মোস্তফার, সেটি প্রমাণ হয়েছে তারই দেয়া এই তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই অবাক করা তথ্য পায় সময়ের কণ্ঠস্বরের অনুসন্ধানী দল। যে মাছ চাষের পুকুর এবং গরুর খামার দেখিয়ে ঋণ নিয়েছিল আরজুর স্ত্রী, বাস্তবে তার কোন অস্তিত্বই নেই! যেখানে খামারের অস্তিত্ব নেই সেখানে বন্যায় মাছ চলে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। স্থানীয়রা বলেন, এখানে আরজুর কোনো মাছের খামারের কথা তারা জানেনই না। তবে আরজুর যে অনেক চালাক প্রকৃতির লোক এবং বিগত সরকারের আমলে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল এ বিষয়ে অনেকেই অবগত। ঘটনার অনুসন্ধানে আরও জানাযায়, যে সময় হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেসময়ে লক্ষীপুর ভয়াবহ বন্যা কবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত ছিল। ভয়াবহ বন্যার কারণে সেসময় ত্রাণ বিতরণকারীরা অনেক এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ সেনা এবং বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার দিয়ে এাণ সরবরাহ করা হয়। সে সময় এ এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল, ফলে ইচ্ছে করলেই যে কারোর পক্ষে এ এলাকায় আসার সুযোগ ছিল না। এছাড়া ওই সময় আম্বালা ফাউন্ডেশনসহ প্রায় সব এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় কিস্তি আদায় বন্ধ রেখেছিল। অথচ আরজুর স্ত্রীর দায়ের করা এজাহারের হুবহু ঘটনা তুলে ধরে এসআই মোস্তফা প্রতিবেদন দিয়েছেন, ‘আম্বালা ফাউন্ডেশন থেকে ০৫ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার পর মাছের ঘেরে বিনিয়োগ করে আরজু। বন্যায় ২০ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হলে কিস্তির টাকা পরিশোধে সময় চায় আরজু। তবে প্রতিষ্ঠান সেটায় রাজি না হয়ে আরজুর বসতবাড়িতে গিয়ে বটি দিয়ে কুপিয়ে হাতে রক্তাক্ত করেন আম্বালা ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। পরে তাঁরা বাদিনীর গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। পরে প্রতিবেশিরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।’হামলার ঘটনার অনুসন্ধানে গিয়ে আরজুর বাড়ির আশে পাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা হয় সময়ের কণ্ঠস্বরের অনুসন্ধানী দলের। প্রতিবেশিরা আরজুর বাড়িতে এনজিও কর্মকর্তাদেও হামলার কোনো ঘটনাই জানেন না। আর হাসপাতালে নেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তাদের ভাষ্যমতে, এত বড় ধরনের ঘটনা ঘটলে এলাকায় কেউ না কেউ জানতো। কারণ এমন ঘটনায় আহত হলে মুহূর্তেই এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হতো। তবে জমি সক্রান্ত একটি বিরোধে প্রতিবেশিদের সাথে মারামারির ঘটনা ঘটেছিল। এছাড়া পূর্বেও তাঁরা অন্যকে ফাঁসাতে নিজেরাই বিভিন্ন নাটক সাজিয়েছে। প্রতিবেশি আবুল কাশেম বলেন, এনজিওর কোনো লোক কর্তৃক এমন হামলার ঘটনা ঘটেনি। কোনো এনজিও কর্তৃক এমন কিছু হতে আমরা দেখিনি। ঋণের কিস্তি না দেওয়াতে এনজিও কর্মীরা বটি দিয়ে কুপিয়েছে এমন ঘটনা ঘটলে কেউ না কেউ শুনতো। আর এমন ঘটনা অবশ্যই মানুষের মুখে মুখে শোনা যেত।স্থানীয় বাসিন্দা জাবেদ বলেন, এনজিওর লোক এসে হামলা করেছে এমন কিছু আমি শুনিনি। যদি এমন কিছু করতো এলাকার লোকজন কানাঘোষা (আলোচনা) করতো। এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমি জানি না এবং শুনিওনি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক প্রতিবেশি জানান, আরজু যে চালাক ও দুষ্ট প্রকৃতির লোক সে অন্য কোনভাবে তার স্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনাকে, অথবা নিজেরা ঘরের মধ্যে এমনটা ঘটিয়ে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে থাকতে পারে। স্থানীয়রা জানান, কোন এক সময় আরজু সুপারির ব্যবসা করতেন। পরবর্তিতে আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে নেতা বনে যান। বাগিয়ে নেন লক্ষীপুর যুবলীগের প্রচার সম্পাদকের পদ। মূলত এর পর থেকেই মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকেন সে। মানুষের নামে মিথ্যা মামলা এবং পুলিশ প্রশাসন দিয়ে হয়রানির অভিযোগও পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে মানুষের জমি দখলের তথ্যও পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের ত্রাস জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি, সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, লক্ষ্মীপুরের গডফাদারখ্যাত এমএ তাহেরের বড় ছেলে এ কে এম সালাউদ্দিন টিপুর দুর্ধর্ষ ক্যাডার ছিলেন জান্নাতুলের স্বামী আশরাফ উদ্দিন আরজু। তার নামে রয়েছে পুলিশের উপর হামলা, হত্যা মামলাসহ নানা অভিযোগ। এছাড়া আওয়ামী সরকার বিরোধী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে গত ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের রাজপথে ছাত্র হত্যার একাধিক মামলায় গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আশরাফ উদ্দিন আরজু। কয়েকজন জেল খেটে গতমাসে তিনি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে আম্বালা ফাউন্ডেশনের দায়িত্বরত জোনাল ম্যানেজার মফিজুল ইসলাম আকাশ সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, আম্বালা ফাউন্ডেশন বিগত বছরে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর এলাকায় বন্যাদুর্গতদের মাঝে নগদ এবং পণ্য সামগ্রী দিয়ে ৭০ লক্ষ টাকার মতো বিতরণ করেছে। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ১০ লক্ষ টাকার মতো জমা করে বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। যে প্রতিষ্ঠান সুনামের সারা দেশব্যাপী ঋণকার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা কিস্তির টাকার জন্যে এভাবে কর্মীর গায়ে হাত তুলবে এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। তিনি আরও বলেন, কেউ একজন স্বেচ্ছায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে একটা সার্টিফিকেট তুলে অন্যজনের নামে মামলা করলেই যদি সেটি বিশ্বাসযোগ্য হয়, তাহলে পুলিশ বা তদন্ত কর্মকর্তার কাজ কী? পুলিশের তো দেখার কথা আসলেই ঘটনাটা আসামি পক্ষের কেউ ঘটিয়েছে, নাকি অন্য কোনোভাবে সে আক্রান্ত হয়েছে। আম্বালা ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রাম জোনের দায়িত্বে থাকা মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রামের (এমএফপি) সহকারী পরিচালক পলাশ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের কোন কর্মী সদস্যের ওপর এভাবে বটি দিয়ে হামলা ও হত্যা চেষ্টা করার দুর্সাহস দেখাবে না। কারণ তারা এতটুকু জানেন এ ধরণের কার্যকলাপের দায়ভার প্রতিষ্ঠান নেবে না। ওল্টো ঋণ গ্রহীতার গায়ে হাত তুললে তার চাকরি চলে যেতে পারে। তাই ঋণ আদায়ের জন্য হামলা করে মামলার আসামি হওয়ার খায়েশ কারো থাকবে না। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা সঠিক ঘটনা উদঘাটন না করে মনগড়া এমন প্রতিবেদন দেওয়ায় আমরা সত্যিই হতবাক।এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মুহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, মেডিকেল সার্টিফিকেটের ওপর ভিত্তি করে আমাদের কাজ করা লাগে। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ থাকে না, করলে সমস্যা হয়। এজন্য ডাক্তারি সার্টিফিকেটের আলোকে আমি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে এতে কারও ফাঁসি বা যাবজ্জীবন কিছুই হবে না। আরজুর সঙ্গে ‘সখ্যতা’ এবং আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আরজুর আয়ু, তাঁর সঙ্গে আমার বেনিফিশিয়ারি কী হইছে না হইছে একথা তো তৃতীয় পক্ষ বলার কথা না। আর বেনিফিশিয়ারি হইলেও আপনি বলবেন না হইলেও আপনি বলবেন যেহেতু সে আমার বাদি। এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মোন্নাফ বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনটি আমি আগে ভালোভাবে পড়ে দেখি। তারপর বিষয়টি আমি দেখবো। মেডিকেল রিপোর্টের বাইরে গিয়ে তদন্তের মাধ্যমে সঠিক ঘটনা উদঘাটন করে তদন্ত কর্মকর্তা রিপোর্ট দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে লক্ষীপুর সদর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার কাজই তো এটা। ঘটনার সতত্য উদঘাটন করা, ঘটনার কারণ খুঁজে বের করা। তবে তদন্ত কর্মকর্তা যদি মনে করেন মেডিকেল সার্টিফিকেটে যেটা এসেছে, তদন্ত উনি একই পেয়েছেন তখন সে হুবহু রিপোর্ট দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বাক্ষী, প্রমাণ নিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, হতে পারে এই মামলা নিয়ে কোনো অভজারবেশনের বিষয় আছে। অনেকসময় সব বিষয় আমাদের গভীরভাবে দেখা সম্ভব হয় না। যেহেতু আপনি বিষয়টি নিয়ে কল দিয়েছেন, আমি জানব আসলে ঘটনাটা কী।এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পুলিশের এ ধরনের মিথ্যা দায়সাড়া তদন্ত শুধু আইনের শাসনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে না, বরং ভবিষ্যতে অপরাধ দমনেও বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাঁরা এসআই গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন-  লক্ষ্মীপুরে এনজিও থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে দম্পতির প্রতারণাছাত্রহত্যা মামলায় লক্ষ্মীপুরের আলোচিত যুবলীগ ক্যাডার আরজু গ্রেপ্তার

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
সিরাজদিখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের উপর হামলার চেষ্টা
সিরাজদিখানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকের উপর হামলার চেষ্টা

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কাটা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর হামলার চেষ্টা করেছে মাটি কাটা Read more

‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না’
‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না’

সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেছেন, গণতান্ত্রিক দেশে সবাই মত প্রকাশ করতে পারবে। সেই স্বাধীনতা সবার রয়েছে।

সেই ফ্ল্যাটে গিয়ে গোয়েন্দাদের জিহাদ দেখালো কীভাবে আনোয়ারুল আজীমকে খুন করে তারা
সেই ফ্ল্যাটে গিয়ে গোয়েন্দাদের জিহাদ দেখালো কীভাবে আনোয়ারুল আজীমকে খুন করে তারা

আনোয়ারুল আজীম হত্যার ঘটনার পুনর্নিমাণ করা হয় সোমবার। ঘটনাস্থলে গিয়ে জিহাদ হাওলাদার গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দেখান কীভাবে বাংলাদেশের সংসদ সদস্যকে হত্যা Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন