মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও মিলনকে ফিরে পাননি বাবা। প্রায় ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। মিলন হোসেন (২৩) পীরগঞ্জ উপজেলার ৩ নং খনগাঁও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা পানজাব আলীর ছেলে। সে দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র। অপহৃত হওয়া কলেজ পড়ুয়া সেই শিক্ষার্থীকে দ্রুত ফিরে পেতে ও অপহরণের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁওবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধনে অংশ নেন মিলনের পরিবারসহ এলাকাবাসী ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা। মানববন্ধনটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তাায় এসে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।এ সময় অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিলনের মা বলেন, আমার ছেলেকে অপহরণ করে তারা কোথায় রেখেছে জানিনা, কেমন আছে জানিনা। অপহরণকারীরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল, আমরা গরিব খেটে খাওয়া পরিবার সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েছি। মুক্তিপণের দাবি পূরণ করার পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়নি। দ্রুত মায়ের ছেলেকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে এবং অপহরণকারীদের আটক করে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।উল্লেখ্য, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন মুক্তিপণ বেড়ে ১০ লাখ হয়। তিনদিন পর ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সবশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র।সর্বশেষ ৯ মার্চ রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ১০টার ট্রেনে উঠতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে চক্রটি। মিলনের জন্য দুই সেট পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ১০ মিনিট পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্র। এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় চক্রটি। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর