এলো বনান্তে পাগল বসন্ত। বনে বনে মনে মনে রং সে ছড়ায় রে, চঞ্চল তরুণ দুরন্ত। বাঁশীতে বাজায় সে বিধুর পরজ বসন্তের সুর, পান্ডু-কপোলে জাগে রং নব অনুরাগে রাঙা হল ধূসর দিগন্ত। কিশলয়ে-পর্ণে অশান্ত ওড়ে তা’র অঞ্চল প্রাস্ত। পলাশ-কলিতে তা’র ফুল-ধনু লঘু-ভার, ফুলে ফুলে হাসি অফুরন্ত। এলো মেলো দখিনা মলয় রে প্রলাপ বকিছে বনময় রে। অকারণ মন মাঝে বিরহের বেণু বাজে। জেগে ওঠে বেদনা ঘুমন্ত। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতার মতো রুপ ধারণ করেছে প্রকৃতি। পাতা ঝরা শিমুলের গাছগুলো এখন ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। অবারিত সৌন্দর্য মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির মধ্যে। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় শিমুল আর পলাশ ফুল সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। সবুজের মধ্যে যেনো আলপনার রং। ফুলের মধ্যে কুকিলের কন্ঠে কুউহু কুউহু ডাক যেনো প্রকৃতির নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের বার্তা৷ একসময় গ্রাম বাংলায় প্রচুর শিমুল গাছ থাকলেও বর্তমানে তা অনেকাংশেই কমে এসেছে৷ শিমুল গাছের ফল থেকে তুলা হয়৷ তা দিয়ে বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করা হয়৷ এছাড়াও শিমুলের কাঠের চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে প্রকৃতির মধ্যে বসন্ত চলছে। ফাল্গুনের মাসে প্রকৃতির যৌবন যেনো ফিরে আসে৷ শুকনো পাতাগুলো ঝরে এখন সবুজ পাতায় সজ্জিত গাছপালা৷ বোর ফসলের মাঠ এখন সবুজের সমারোহ। তার আশপাশে শিমুল গাছের ফুল বহুমুখী সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ লাল টকটকে ফুলের মধ্যে নানান পাখিদের আনাগোনা আর কিচিরমিচির শব্দ দারুণ উপভোগ্য৷ পাখিদের দল এক ডাল থেকে আরেক ডালে ডানা মেলে মনের আনন্দে ছুটে বেড়াচ্ছে৷ মৌমাছি মধু আহরণে ব্যাস্ত সময় পার করছে৷ কাঁঠাল, আম, লিচুসহ নানান ধরনের গাছে ফুল এসেছে। নানান ফুলের ঘ্রাণে মাতোয়ারা চারদিক৷ কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চর ঝাকালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হেকিম বলেন, বসন্তের মাস দারুণ লাগছে। প্রকৃতি যেনো বদলে গেছে৷ দেখতে মৃত গাছগুলো যেনো জেগে ওঠতে শুরু করেছে৷ ফুলে সয়লাব হয়ে আছে প্রকৃতি৷প্রকৃতি প্রেমী ছাদেকুল ইসলাম বলেন, বসন্ত মানেই জাগরণ। আমাদের গ্রাম বাংলা কতটা সুন্দর তা বসন্তের মাসে অনুভব করতে পারি৷ যেদিকে চোখ যায় সবুজে ভরপুর৷ কতরকম ফুল ফুটেছে এই সময়ে। এসব দৃশ্য আমাদের উদ্বেলিত করে৷
Source: সময়ের কন্ঠস্বর