ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় রাতের আঁধারে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডে বাজারের ৮টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার বেলবানা বাজারের খালপাড় মার্কেটে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা হলেন, কিরামত আলী, সিরাজুল ইসলাম ও মামুন মোল্যার মুদি দোকান, নিসারুল ইসলামের পোল্ট্রি মুরগির দোকান, আজমির শেখ ও বায়েজিদ শেখের ফাস্টফুড, সোনা মিয়ার প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকান ও শরিফুল ইসলামের চায়ের দোকান। এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে ইমদাদুল হকের ফার্মেসীর দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।জানা যায়, মামুন মোল্যার মুদি দোকান থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে এবং গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে মুহুর্তের মধ্যে আগুন আশপাশের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বাজারের নৈশপ্রহরীদের চিৎকারে আশে-পাশের লোকজন ছুটে এসে প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়ে আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে একে একে বাজারের আটটি দোকান ঘরের সম্পূর্ণ মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়।ক্ষতিগ্রস্ত মুদি ব্যবসায়ী কিরামত আলী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, দুঃখ আর আমার পিছু ছাড়লো না। কয়েকবছর আগে বিদেশ গিয়েছিলাম। সেখানে আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে সবকিছু হারিয়েছি। পরে বাড়িতে এসে জমি বিক্রি করে ও কিস্তিতে ঋণ নিয়ে মুদি দোকান দিয়েছি। কিন্তু গতরাতে সর্বনাশা আগুন আমার দোকানের সবকিছু শেষ করে দিলো। আমি এখন সম্পূর্ণ নিঃস্ব হয়ে গেলাম।অপর এক ক্ষতিগ্রস্ত সোনা মিয়া বলেন, আমি একটি ভ্যান যোগে প্লাস্টিকের মালামাল ফেরি করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করি। সারাদিন বিক্রি শেষে মালামালগুলো বাজারের দোকানে রাখি। এ থেকেই চলে আমার সংসার। পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে কিস্তি চালতে হয়। কিন্তু ভয়াবহ আগুনে সব মালামালসহ ভ্যান গাড়িটিও পুড়ে গেছে।আলফাডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন সাব অফিসার আসলাম হোসেন বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত। কমপক্ষে এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।এদিকে খবর পেয়ে বুধবার (৫ মার্চ) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলো ঘুরে দেখে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসারীদের তালিকা তৈরি করে সরকারিভাবে যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর