ময়মনসিংহের নান্দাইলে এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলন ও বেশি দাম পেয়ে খুশী চাষি। তাদের চোখে-মুখে তৃপ্তির হাঁসি। প্রতিটি গাছে ৫০ থেকে ১০০ এবং তারও অধিক কাঁঠাল ধরেছে। এ যেন কাঁঠালের রাজত্ব।প্রতিটি কাঁঠাল গাছে ঝুলে রয়েছে ছোট বড় শত শত কাঁঠাল। পাকা কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে মুখরিত চারপাশ।গাছে গাছে ভিড় করছে পাখ-পাখালি আর কীট পতঙ্গের দল। গাছগুলোতে সারি সারি কাঁঠাল দেখে থমকে দাঁড়ায় পথিক। বাড়ি বাড়ি কাঠালের মিষ্টি রসে চিড়া ও মুড়ি খাওয়ার ধুম। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নান্দাইলে ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৮ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০০ মে. টন কাঁঠাল উৎপাদন হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।নান্দাইলে বাণিজ্যিক ভিত্তিক কাঁঠাল বাগান নেই। বাড়ির আঙিনা, পতিত জমি ও রাস্তার দুই পাশের জমিতে কাঁঠালগাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছের গোঁড়া থেকে আগা পযর্ন্ত শোভা পাচ্ছে জাতীয় ফল কাঁঠাল। উপজেলার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করেন গাছ মালিক ও ব্যবসায়ীরা।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার চরাঞ্চলে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় ও রাস্তার দু’ধারে দেখা যায় সারি সারি কাঁঠাল গাছ। প্রতিটি কাঁঠাল গাছে ছোটবড় কাঁঠালে ভরপুর। উপজেলার হাটবাজার গুলোতে পাকা কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। ক্রেতা বিক্রেতারা ভীড় করছেন বাজারগুলোতে।অনেক যাচ্ছেন কৃষকের বাড়িতে।বিশেষ করে চরকামট খালী, চরউত্তরবন্দ, চরশ্রীরামপুর, চরভেলামারী, চরলক্ষীদিয়া গ্রাম কাঁঠালের জন্য বিখ্যাত। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বিভিন্ন হাট-বাজারে, চাষীদের বাড়িতে পাইকারদের উপচেপড়া ভিড় থাকে। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা বিভিন্ন যানবাহনে করে কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। এখানে প্রতিটি বড় সাইজের কাঁঠাল বর্তমানে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের কাঁঠাল ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং ছোট কাঁঠাল ২৫ থেকে ৩০ ও ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছে মাঝারি সাইজের কাঁঠালের কদর রয়েছে সবচেয়ে বেশি। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কাঁঠাল মালিকরা।আষাঢ়-শ্রাবণ মাস কাঁঠাল পাকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁঠাল বাজারে বেচা-কেনা হচ্ছে। কাঁঠালের একটি বড়গুণ এর কোনো কিছু বাদ যায় না। কাঁঠালের কোষ, খোসা ও বিচি সব কিছুই প্রয়োজনীয়। বিচি উৎকৃষ্টমানের সবজি হিসাবে তরকারি রান্না করে খাওয়া হয়। কাঁঠালের খোসা গরু-ছাগলের প্রিয় খাদ্য। তাছাড়া কাঁঠালের পাতা ছাগল-ভেড়া- গরুর প্রিয় খাবার হিসেবে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কাঁঠাল উৎপাদনে কোনো খরচ না থাকায় চাষীরা লাভবান বেশি হয়।চরকামটখালী গ্রামের মজনু মিয়া জানান, তার বাগানে ৩২টি কাঁঠাল গাছ আছে। রতন মিয়ার ২০টি, রিপন ২০, রোমান ২০, শহীদ ২৫ ও দেলোয়ারের ৩০টি কাঁঠাল গাছ আছে।মজনু মিয়া জানান, এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেছি। দেলোয়ার বিক্রি করেছেন ১৫ হাজার টাকার কাঁঠাল।কাঁঠাল চাষি মজনু মিয়া, রতন মিয়া, রিপন, রোমান ও শহীদ জানান, এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে খুশি তারা।উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নাঈমা সুলতানা বলেন, নান্দাইলের মাটি বিশেষ করে চরাঞ্চলের মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ বছর উপজেলায় কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে করে কৃষকরা কাঁঠাল বিক্রি করে অনেক লাভবান হবেন।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর