দীর্ঘ ঈদুল আজহার ছুটিকে আরও উপভোগ্য করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। আর ভ্রমণপিপাসুদের নতুন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গড়ে ওঠা জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (BEZA) সমুদ্র সৈকত। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘মিনি সি-বিচ’ নামে পরিচিত।শিল্পনগরের বিশাল বিস্তৃত ফ্যাক্টরি ও গার্মেন্টস শিল্পের পাশাপাশি রয়েছে খোলা প্রাকৃতিক পরিবেশ। চারপাশে উঁচু-নিচু সবুজ ভূমি, দিগন্ত বিস্তৃত নীলাকাশ আর আঁকাবাঁকা পথ যেন প্রকৃতির সাথে মানুষের আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। এর পাশেই বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গড়ে উঠেছে মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতটি।ঈদের ছুটিতে মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সৈকতজুড়ে উপচে পড়া পর্যটকদের ভিড়। হাজারো মানুষ পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বেড়াতে এসেছেন এখানে। সৈকতের আশপাশে বসেছে কয়েকটি অস্থায়ী দোকান, যেখানে পাওয়া যাচ্ছে ঝালমুড়ি, বাদাম ভাজা, বুট ভাজা ও বিভিন্ন ঠান্ডা পানীয়। এসব দোকান থেকে ভ্রমণপিপাসুরা নিজেদের ক্ষুধা ও তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন।দেখা যায়, সাগরের জোয়ার-ভাটার খেলা সৈকতের রূপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। শিল্পনগরের পাশে সুরক্ষার জন্য নির্মিত সুপার ডাইক আর তার ঠিক পাশেই এই সৈকত। ঈদের ছুটি ছাড়াও প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।সীতাকুণ্ড থেকে ঘুরতে আসা আলী আহমদ বলেন, “এই প্রথম এখানে এসেছি। সত্যিই অসাধারণ এক জায়গা। পানির গর্জন, নরম হাওয়া আর প্রশস্ত পরিবেশ যে কারও মন ভালো করে দেবে। পরিবার-পরিজন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর আদর্শ স্থান এটি।”পর্যটন স্পট হিসেবে সরকারি উদ্যোগের দাবি জানিয়ে ঘুরতে আসা ইমতিয়াজ বলেন, “এখানে এসে কক্সবাজারের একটুখানি অনুভূতি পাওয়া যায়। সরকার চাইলে এটিকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। উন্নয়ন আর রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে মিরসরাইয়ের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে সৈকতটি।”পর্যাপ্ত সুবিধার অভাবের কথা জানিয়ে নাছির উদ্দিন বলেন, “এখানে ঘুরতে এসে অনেক সময় শৌচাগারের প্রয়োজন হয়, কিন্তু কোনো গণশৌচাগারের ব্যবস্থা নেই। প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে এখানে যদি খাবারের দোকান, বিশ্রামাগার ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়, তবে পর্যটকদের জন্য আরও উপযোগী হবে।”জানা গেছে, একসময় এই জায়গায় পর্যাপ্ত যোগাযোগের কোনো সুবিধা ছিল না। স্থানীয় জেলেরা খালপথে নৌকায় করে সমুদ্রে যেতেন মাছ ধরতে। কিন্তু জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওঠার পর বদলে যায় এখানকার দৃশ্যপট। সাগর ঘেঁষে নির্মিত হয় সুপার ডাইক, বসানো হয় ব্লক। এসব উন্নয়নের পর ধীরে ধীরে উন্মোচিত হয় এই সৈকতের সৌন্দর্য।স্থানীয়দের প্রত্যাশা, সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে খুব শিগগিরই মিনি সি-বিচ হিসেবে পরিচিত এই শিল্পনগর সমুদ্র সৈকত মিরসরাইয়ের অন্যতম পর্যটন স্পটে রূপ নেবে। এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর