লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগরে টানা বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে পৌরশহর সহ অন্তত ২৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,বেড়িবাঁধসহ শত শত বাড়িঘর।বুধবার গভীর রাত থেকে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে দুটি উপজেলা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রামগতি ও কমলনগর উপজেলার কোথাও বিদ্যুৎ নেই। সম্পুর্ন অন্ধারে রয়েছে এ দুই উপজেলার সাড়ে সাত লাখ মানুষ।আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতেও বিদ্যুৎ না আসার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।বুধবার (২৮ মে) থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয় জেলার রামগতি-কমলনগরে। মেঘনা উপকূলীয় এ দুটি উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ২৭টি গ্রাম নদীর তীরবর্তী। সামান্য বৃষ্টি ও মেঘনার তীব্র জোয়ারে পানি লোকালয় প্রবেশ করে। এতে এ অঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধসহ শত শত বাড়িঘরে পানি ঠুকে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকে প্রচন্ড বৃষ্টি হয় এ অঞ্চলে। এতে বৃষ্টির পানি ও মেঘনার তীব্র জোয়ারে পানি ঠুকে পড়ে লোকালয়ের লক্ষাধিক মানুষের ঘরবাড়ীতে।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ইউনিয়নের তিনটি, রামগতি পৌরসভার দুইটি, চররমিজ ইউনিয়নের ২টি , বড়খেরী ইউনিয়নের ২টি ও চরগাজী ইউনিয়নের ৩টি মিলে মোট ১২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রামে পানি ঠুকে পড়েছে। এছাড়া কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের দুইটি, চরকালকিনি ইউনিয়নের তিনটি, সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ৫টি ,চরফলকনের ২টি ও পাটারীরহাট ইউনিয়নের ৩টি সহ ১৫টি ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। ২টি উপজেলার মোট ২৭টি গ্রামের বেশ কিছু এলাকার মানুষ এখন পানিবন্দি। এছাড়া এসব ওয়ার্ডের কয়েকটি রাস্তা ভেঙে যাতায়াত ব্যবস্থাও বন্ধ রয়েছে।রামগতির বিবিরহাট এলাকার ডা. আবু তাহের জানান, চররমিজ, বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামে মেঘনা নদীর পানি ঠুকে পড়েছে। অন্যদিকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এতে ওই অঞ্চলর মানুষ এখন অনেকটা পানিবন্দি।চরগাজী ইউনিয়নের বাসিন্দা গোলাম রাব্বানী জানান, তার এলাকা মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চলে। একদিকে নদীর জোয়ারের পানি, অন্যদিকে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে মানুষের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। হাটবাজার যাওয়াটাও কষ্টকর হয়ে গেছে।কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মাহফুজুর রহমান রাজন জানান,তার ওয়ার্ড কয়েকটি গ্রামে পানি ঠুকে রাস্তা ঘাট ভেঙে গেছে। ২ শতাধিক মানুষের ঘরবাড়িতে পানি ঠুকে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। মানুষ এখন ঘরবন্দী।কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত উজ জামান বলেন, ২দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সবগুলো এলাকার খোঁজ খবর নিচ্ছে।রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, এ অঞ্চলটি মেঘনা উপকূলীয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই নদীর তীরবর্তী এলাকা গুলো ডুবে যায়। নদীর জোয়ার ও বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে সব একাকার হয়ে গেছে। আমরা উপজেলা প্রশাসন খবর নিচ্ছি। ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর