কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে গাছ থেকে আম পাড়াকে কেন্দ্র দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে মমতাজ বেগম নামের (৬০) এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জিল্লুর রহমান (৪০) গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।সোমবার (১২ মে) বিকালে উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহ পুর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।নিহত মমতাজ বেগম উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহ পুর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের মতিউর রহমানের স্ত্রী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোবরিয়া এলাকার নজের বাড়ির বংশের কাল্লু মিয়ার সাথে তাদের চাচাতো ভাই আঙুর মিয়া ও জয়নাল মিয়াদের দীর্ঘদিনের জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। জমিতে ছিল একটি আম গাছ। দুই পরিবারই আম গাছটি নিজেদের দাবি করে। আজ সোমবার বিকালে কাল্লু মিয়ার পরিবার গাছ থেকে আম পাড়তে গেলে আঙুর মিয়াদের পরিবারের পক্ষ থেকে বাধা দেয়া হয়। এসময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও মারামারি শুরু হয়। মারামারি কথা শুনতে পেয়ে আঙুর মিয়াদের পক্ষ নিয়ে দৌড়ে মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে তাদের আরেক চাচাতো ভাই জিল্লুর রহমান। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে ঘটনাস্থলে যায় জিল্লুর রহমানের মা মমতাজ বেগম। এসময় প্রতিপক্ষের ইট ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে আহত হোন জিল্লুর রহমান ও তার মা মমতাজ বেগম। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় মা-ছেলে দুইজনকেই উদ্ধার করে বাজিতপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মমতাজ বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত জিল্লুর রহমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।এ বিষয়ে নিহতের ভাইপো মোবারক মিয়া বলেন, একই বংশের চাচাদের মারামারি ঠেকাতে গিয়েছিল জিল্লুর রহমান। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে গিয়ে মা ও ছেলে দুইজনই প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে আমার ফুফুকে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন। সামান্য আম পাড়াকে কেন্দ্র করে আমার ফুফুকে তারা মেরে ফেলেছে। এঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। মরদেহ বাজিতপুর মেডিকেলে কলেজ মর্গে রয়েছে। সেখান থেকে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপরতা চালিয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর