চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় সরকারি জমি দখল করে প্রকাশ্যে মাটি কেটে বিক্রির মহোৎসব চলছে। স্থানীয় এক বিএনপি নেতার প্রত্যক্ষ মদদে উপজেলার ৯ নম্বর পরৈকোড়া ইউনিয়নের চারুশিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি বড় দিঘী খনন করে প্রতিদিন ট্রাকভর্তি করে বিক্রি করা হচ্ছে মাটি।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি বড় এস্কেভেটর দিয়ে দিঘীর মাটি কাটা হচ্ছে এবং তা ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। ট্রাকপ্রতি মাটি বিক্রি হচ্ছে প্রায় এক হাজার টাকায়। এভাবে দিনের পর দিন মাটি লুট হচ্ছে, অথচ কোনো সরকারি পর্যবেক্ষণ বা প্রতিরোধ নেই।ঘটনাস্থলে উপস্থিত আবু বক্কর নামের এক ব্যক্তি নিজেকে পরৈকোড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, “আমি এর আগেও রমজান মাসে দুই মাস ধরে মাটি কেটেছি, বিক্রিও করেছি। তখন তো কেউ কিছু বলেনি, এখন কেন সাংবাদিকরা এসেছেন?”তিনি দাবি করেন, এই কাজ মানবসেবার অংশ।তবে তিনি আরও বলেন, “মূলত এই মাটি কাটার মূল উদ্যোক্তা আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, যার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার খাসখামায়। তিনি নিজেকে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা মীর নাসির উদ্দিনের পিএস (পার্সোনাল স্টাফ) হিসেবে পরিচয় দেন। মূল নিয়ন্ত্রণ তার হাতেই।”এদিকে এলাকাবাসীর মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, এই মাটি কাটার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক ছত্রছায়া। তাদের মতে, “পতিত স্বৈরাচার সরকার, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একটি অদৃশ্য যোগসাজশেই এই দখলবাজি ও মাটি লুট চলছে। এ সম্পদ রাজনীতির লোভের বলি হয়ে যাচ্ছে।”এ ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, রাজনৈতিক পরিচয় ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কৌশলে সম্পদ দখল করা হচ্ছে। পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশের ভূমির ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আক্তার সময়ের কন্ঠস্বর-কে জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান কে বিষয়টা দেখবার করার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তো তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।৯ নং পরৈকোড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ মোর্শেদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যামের ফোন পেয়ে আমি বিষয়টি ৪নং ওয়ার্ড এর ইউপি সদস্যকে জানিয়েছি। সে বিষয়টি দেখবে এবং আমাকে জানাবে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর