জিওগ্রাফিকাল আইডেনটিফিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের সনদ পেল ভোলার ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী খাবার মহিষের দুধের কাঁচা টক দধি ‘মইষা দই’।গত বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫ এর আলোচনা সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানের হাত থেকে ভোলাবাসীর পক্ষে এ স্বীকৃতি সনদ গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান।এর আগে, ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ভোলা জেলা প্রশাসকের আবেদনের পরিপেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের ৫৫টি জিআই পণ্যের মধ্যে ২৯ নম্বর শ্রেণিতে ব্রান্ডিং পণ্যের স্বীকৃতি পায় দ্বীপজেলার এই ঐতিহ্যবাহী খাবারটি।জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর তীর ঘিরে গড়ে ওঠা ছোট-বড় প্রায় ৩২টি চরে ১ লাখ ২৪ হাজারেরও বেশি মহিষ লালন পালন করছেন খামারিরা। এসব খামার থেকে প্রতিদিন প্রায় ৪০ টন দুধ উৎপাদন হয়। উৎপাদিত এসব মহিষের দুধ বিভিন্ন পাত্রে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা রেখে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে দই তৈরি করেন ব্যবসায়ীরা। তারা প্রতি কেজি দই বিক্রি করেন ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়।ভোলার মানুষের সামাজিক ও পারিবারিক যেকোন অনুষ্ঠানে মহিষের দুধের দই না হলে আয়োজনে যেনো পূর্ণতা পায় না। খাবার হজমে সহায়তা করা খাবারটির জনপ্রিয়তা ছড়িয়েছে দেশব্যপী।ভোলা শহরের মইষা দই বিক্রেতা ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মহিষের দধির জিআই পণ্যের স্বীকৃতির সনদ পেয়ে তারা খুব খুশি। তবে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার পরিধি আরো বাড়াবেন বলেও জানিয়েছেন। ভোলার সচেতন মহল বলছে, ঐতিহ্যবাহী মইষা দইয়ের মান ধরে রাখতে হলে প্রশাসনকে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ে কার্যকর উদ্যোগসহ চরে মহিষের অবাধ বিচরণের ব্যবস্থা নিতে হবে।ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ সনদ প্রাপ্তি ভোলাবাসীর জন্য আনন্দের। ভোলা জেলা প্রশাসক দীর্ঘদিন ধরে মহিষের দই জিআই পণ্যের স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা করেছেন। সেটা এখন বাস্তবায়ন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দধি হয় দুধ থেকে, মহিষের দুধের উৎপাদন বাড়াতে মহিষের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মহিষ সুস্থ-সবল রাখতে খামারিদের আমরা সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি, একই সঙ্গে মহিষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে ভেক্সিনেশনও করা হচ্ছে। এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর