আমকে বলা হয় ফলের রাজা। কারণ এতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আম বাংলাদেশের জাতীয় গাছ। আম গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা। বাংলাদেশের রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর, নাটোর, সাতক্ষীরা, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় ভালো মানের এবং রপ্তানিযোগ্য আম চাষ হয়ে থাকে। আমের স্বাদের যে ভিন্নতা সেটি মূলত এর জাতের ওপর নির্ভরশীল। ১৫০০টিরও বেশি জাত ও ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতি রয়েছে আমের এবং সবগুলো জাতই একে অপরের থেকে আলাদা। টক আর অতি মিষ্টি এবং এর মাঝখানে যত রকম স্বাদ রয়েছে সবই আমাদের আমের জাতগুলোতে রয়েছে।দেশের জনপ্রিয় জাতের আমগুলোর সুন্দর সুন্দর বাহারী নাম রয়েছে। এক নামে সারাদেশের মানুষ এদের চিনতে পারে। এসব জাতের একটা আলাদা কদর আর চাহিদা রয়েছে আমাদের কাছে। স্বাদে গন্ধে এসব জাতের কোন তুলনা হয় না। সে রকম জনপ্রিয় জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- হিমসাগর, ল্যাংড়া, খিরসাপাতি, হাড়িভাঙ্গা, কোহিতুর, গোপালভোগ, লক্ষণভোগ, মোহনভোগ, কিষাণভোগ, অমৃতভোগ, মিসরীভোগ, কৃষ্ণভোগ, রাজভোগ, ক্ষীরপুলি, শাহী-পছন্দ, রানী-পছন্দ, দিল-পছন্দ, মির্জাপুরী, ফজলি, চসা, আশ্বিনা, বোম্বাই (মালদা), সূর্যপুরী, শ্রীধন, গোলাপ খাস, বৃন্দাবনী, দিল খোশ, কোহিনুর, চৈতালী, জাফরান, দিল খোস, দুধ কুমার, দুধসর, বাবুই ঝাঁকি, মধুচাকী, মিঠুয়া, শ্রাবণী, স্বর্ণরেখা, সুবর্ণরেখা, ক্ষীরপুলি, মল্লিকা, বেগমপসন্দ, মিয়াজাকি আম ইত্যাদি।তীব্র গরমে এক গ্লাস কাঁচা আমের জুস আপনাকে বাঁচাতে পারে হিট স্ট্রোক থেকে। আয়ুর্বেদিক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে রোদের প্রচন্ড তাপে দেহের জীবনীশক্তি ও কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে মাংস পেশী নিস্তেজ হয়ে শরীরকে চলচল অযোগ্য করে তোলে। তখন কাঁচা আমের রস, পানি ও চিনি বা গুড়ের মিশ্রণে তৈরী পানীয় আপনার জীবন বাঁচাতে এবং হিট স্ট্রোক মোকাবেলায় অদ্বিতীয়।প্রতি ১০০ গ্রাম আমে ২৭৪০ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন থাকে। আম শ্বেতসারের ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা আমে ২০ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়। রয়েছে ১০৭ ক্যালরি, ৩ গ্রাম আঁশ, ২৪ গ্রাম শর্করা। এছাড়া এতে রয়েছে ২৫৭ মি.গ্রা. পটাসিয়াম, ০.২ মি.গ্রা ভিটামিন বি-৬।কাঁচা বা পাকা দুই ধরনের আমই শরীরের জন্য ভালো। যেসব আম পাকা না সেগুলো টক কারণ এতে অ্যাসিড বেশি এবং চিনি কম থাকে। অন্যদিকে, পাকা আম মিষ্টি হয় কারণ এতে কম অ্যাসিড এবং বেশি চিনি থাকে।চিকিৎসকদের মতে, আম হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সক্ষম, দেহের হার্ট সম্পর্কিত সিস্টেম অর্থাৎ কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকেও সমর্থন করে। আম ম্যাগনেসিয়াম এবং ইন পটাসিয়াম সমৃদ্ধ। আম পাচনতন্ত্রকে স্থিতিশীল রাখে, ফলে হজম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে, আমের উপস্থিতিতে অ্যামাইলেস যৌগ এবং ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও কাজ করে। এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর