কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকারচর গ্রামে জোরপূর্বক জমি দখল ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশী মো. নাজিমের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. ইকবাল হোসেন সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগপত্রে ইকবাল হোসেন উল্লেখ করেন, তার পিতা মো. শাহ আলমের সাথে যৌথ মালিকানায় মানিকারচর মৌজায় ১৫ শতাংশ জমি রয়েছে। তার দাবি, তিনি ও তার পিতার বিদেশে অবস্থানকালে মৃত চুনু মিয়ার ছেলে মো. নাজিম (৪৫) জোরপূর্বক ওই জমি দখল করে নেন। পরে দেশে ফিরে স্থানীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হলেও নাজিম তা অগ্রাহ্য করেন।অভিযোগপত্রে ইকবাল হোসেন উল্লেখ করেন, দীর্ঘ দুই বছর ধরে একাধিকবার সময় নেওয়া সত্ত্বেও মো. নাজিম দখলকৃত জমি ছাড়েননি। থানায় অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি। সর্বশেষ ২১ এপ্রিল জমি থেকে গাছ কাটতে গেলে বাধা দেওয়ার কারণে নাজিম দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইকবাল ও তার পরিবারের ওপর হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় জমির সীমানা নির্ধারণের জন্য বসানো টিনের বেড়া ভেঙে ফেলা হয় এবং বাড়ির প্রবেশের রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। ইকবাল বিষয়টি ভিডিও ফুটেজসহ থানায় অভিযোগ এবং সাংবাদিকদের অবহিত করেন। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত মো. নাজিম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমি দখল করে রেখেছেন এবং ইকবাল ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে রেখেছেন।এ প্রসঙ্গে মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের জমি জোরপূর্বক দখল করে প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।ভূমি সংক্রান্ত নথি অনুযায়ী, ইকবাল হোসেনের জমির বিবরণ: কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানাধীন মানিকারচর মৌজায়, জেএল নং-১০, বিএস নং-৯, খতিয়ান নং-৬৪১ ও বিএস নং-৩৬৪৭; মোট জমির পরিমাণ ১৫ শতাংশ, যার মধ্যে ২.৫০ শতাংশ নালিশী ভূমি রয়েছে।এদিকে অভিযুক্ত মো. নাজিমের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।মেঘনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। বাদীকে আইনি সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ যেন আইনের ঊর্ধ্বে না থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হ্যাপী দাস বলেন, ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যাতে কেউ অন্যের জমি অন্যায়ভাবে দখল করতে না পারে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর