বাংলা নতুন বছর স্বাগত জানাতে গ্রামে গ্রামে বসবে বৈশাখী মেলা। এ মেলাকে সামনে রেখে বছর জুড়ে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মৃৎশিল্পীরা মাটির হাড়ি-পাতিলসহ বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী তৈরী করে থাকেন। এবারও তার ব্যতিক্রম করেনি তারা। আগামী সোমবার বাংলা নতুন বছর পহেলা বৈশাখ ও বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসবে মেতে ওঠবে উপজেলার সর্বস্তরে মানুষ। এই দিনকে ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে মেলা বসে থাকে। মেলাকে ঘিরে বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান বসে। এই মেলায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে রাখে মাটির তৈরী বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান। এই মেলাকে ঘিরে মাটির তৈরী সামগ্রী বিক্রি করার জন্য মৃৎশিল্পীরা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১ টার দিকে সরেজমিনে উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের পালপাড়া ঘুরে দেখা গেছে,কুমারদের সুনিপুন হাতের ছোঁয়ায় নানা রঙে সেজেছে মাটির তৈরী হাড়ি-পাতিলসহ বিভিন্ন খেলনা সামগ্রী। তাদের এই মাটির তৈরী সামগ্রী গুলোতে যেন প্রানের ছোঁয়া লেগেছে। বোঝার উপায় নেই এ গুলো আসল নাকি মাটির তৈরী। উপজেলার যেখানেই মেলা বসে সেখানেই কুমারদের মাটির তৈরী সামগ্রী বিক্রি করার জন্য নিয়ে যান তারা। জানা যায়, রমজান ও করোনার প্রাদূর্ভাবের কারণে গত কয়েক বছর বৈশাখী মেলা না হওয়াতে সব থমকে গিয়েছিল মৃৎশিল্পীদের কর্মযজ্ঞ,কিন্তু এবার বৈশাখী মেলাকে ঘিরে ঘুরে দাড়ানোর নতুন স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার বয়রাগাদী, রশুনিয়া, বাসাইল,রাজানগর, শেখরনগর এই ইউনিয়ন গুলো মৃৎশিল্পীর পরিবারগুলো।ভ‚ইরা গ্রামের মৃৎশিল্পী ননি পাল বলেন, এখন আগের মতো মাটির হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি হয় না। তারপরেও বৈশাখী মেলা কে সামনে রেখে মাটির হাড়ি পাতিল তৈরী করেছি। আশা করছি এবার পহেলা বৈশাখে ভালো বিক্রি করতে পারবো,সেই স্বপ্ন দেখছি।বাসাইল ইউনিয়নের মৃৎশিল্পী কালিপদ পাল বলেন,‘আমি ৪০ বছর ধরে এ শিল্পের সাথে জড়িত আছি। আমরা বাব-দাদার পেশাও ছিল এটা। আমরা প্রতি বছর বৈশাখী মেলাতে মাটির তৈরী সামগ্রী বিক্রি করে থাকি। এখন মাটির তৈরী জিনিস পত্রের কদর কমেছে। এছাড়া আগের মতো বৈশাখী মেলা বসে না,তাছাড়া প্লাস্টিকের তৈরী জিনিস পত্রের চাহিদাও বেড়েছে। তাই বেকার হয়ে পড়েছে মৃৎশিল্পীর কারিগররা। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করে স্বর্ণের কাজ, কেউ বিদেশে, কেউবা কামারের কাজও করছে। বাব-দাদারা এ কাজ করতো বলে আমরা ও করি, তবে কোন রকমে বেচে আছি।’  শেখরনগর ইউনিয়নের পাল পাড়া গ্রামের কৃষ্ণ পাল জানান, বৈশাখী মেলাকে সামনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মেলার দোকানীদের কাছে সরবরাহ করার লক্ষ্যে প্রতিদিনই পাইকাররা এ সব মাটির তৈরী সামগ্রী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ঘরে ঘরে হাজার হাজার মাটির ব্যাংক, পুতুল ও অন্যান্য খেলনা তৈরী করা হয়েছে। তিনি আরো জানান,আমার বাবা,দাদারাও এই পেশায় জড়িত ছিল, আমরাও ধরে রেখেখি, তবে বেশী দিন হয়তো এই পেশায় থাকা যাবেনা । এখন আর আগের মতো মাটির তৈরীর আসবাপত্র চলে না ।  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, মৃৎশিল্পটা হচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য।  আমরা চাই মৃৎশিল্পটা বেচে থাকুক । মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি ভাবে কোনো ধরনের সহায়তার সুযোগ থাকলে তা অবশ্যই করা হবে।এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
কুয়েতে ৪ দিনব্যাপী চারুকলা প্রদর্শনী চলছে
কুয়েতে ৪ দিনব্যাপী চারুকলা প্রদর্শনী চলছে

কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং কুয়েত আর্টস অ্যাসোসিয়েশন, কুয়েত যৌথভাবে কুয়েতের হাওয়ালিতে কুয়েত আর্টস অ্যাসোসিয়েশনে বাংলাদেশ-কুয়েতের সম্পর্কের ৫০ বছর (সুবর্ণজয়ন্তী) উদযাপনের Read more

শুধু গবেষণা হলেই হবে না, মানসম্মত হতে হবে: বিএসএমএমইউ ভিসি
শুধু গবেষণা হলেই হবে না, মানসম্মত হতে হবে: বিএসএমএমইউ ভিসি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসারত রোগীদের সেবার পাশাপাশি গবেষণা কার্যক্রমও সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. Read more

এবার সরানো হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন মেয়রদের
এবার সরানো হচ্ছে সিটি কর্পোরেশন মেয়রদের

‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ অনুযায়ী এবার সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হচ্ছে। তাদের অপসারণের পর প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন