নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) প্রথমবারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে গবেষণা মেলা। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে নেওয়া একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। আগামী ২২ জুন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নোবিপ্রবি রিসার্চ সেলের আয়োজনে এই রিসার্চ ফেয়ার অনুষ্ঠিত হবে।মেলায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর. আবরার এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, যিনি সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টাও ছিলেন।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গবেষণা মেলায় থাকবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন:১. বিভাগীয় স্টল প্রদর্শনী: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগ তাদের গবেষণা কার্যক্রম ও অর্জন প্রদর্শনের জন্য একটি করে স্টল স্থাপন করবে। ৩৩টি বিভাগের মধ্যে একটি বিভাগকে “বেস্ট স্টল” হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে।২. বেস্ট রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড: ২০২০-২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষাবর্ষে এবং প্রতিটি পদের (প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক) জন্য চারটি স্তরে মোট ১৬ জনকে “বেস্ট রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করা হবে।৩. ডিনস অ্যাওয়ার্ড: শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে “ডিনস অ্যাওয়ার্ড”। প্রত্যেক অনুষদ থেকে তিনজন করে এই পুরস্কার পাবেন। আবেদনের জন্য ন্যূনতম সিজিপিএ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩.৭০।কিন্তু সমাজবিজ্ঞান ও কলা অনুষদের ক্ষেত্রে নূন্যতম রেজাল্ট ৩.৬০ নির্ধারণ করা হয়েছে।৪. ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড: গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রদান করা হবে “ভাইস-চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড”। এর মধ্যে একটি সম্মাননা থাকবে “বেস্ট ওমেন রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড”।নোবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত রিসার্চ ফেয়ার নিয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব বলেন,“এ ধরনের আয়োজন আমাদের জন্য ভীষণ অনুপ্রেরণাদায়ক। বিভিন্ন বিভাগের গবেষণাধর্মী প্রজেক্ট এক জায়গায় দেখে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারছি। আমাদের নিজেদের গবেষণার ক্ষেত্রেও নতুন নতুন ধারণা তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি প্রতিবছর এ আয়োজন চালু রাখে, তাহলে আমরা আরও বেশি করে গবেষণামুখী হতে পারব এবং ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারব।”২০২০-২১ শিক্ষার্থী তানভীর হাসান বলেন,” বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এমন ভিন্ন আয়োজন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। রিসার্চ ফেয়ার নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের একাডেমিক লাইফের পাশাপাশি রিসার্চ একটিভিটির মতো কাজগুলাতে উৎসাহ দিবে এবং ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা এধরনের কাজে মনোনিবেশ করবে।”নোবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে গবেষণা মেলা। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। রিসার্চ ফেয়ারের মতো আয়োজন শিক্ষার্থীদের গবেষণায় আগ্রহী করে তুলবে। এ ধরনের আয়োজন শুধু একবারের জন্য নয়, প্রতিবছর নিয়মিতভাবে আয়োজন করা উচিত। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা গবেষণায় অনুপ্রাণিত হবে এবং জ্ঞানচর্চায় আরও মনোনিবেশ করবে।”রিসার্চ সেলের পরিচালক ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, “এ ধরনের আয়োজন করতে পারা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। আমরা আশা করি, এর মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গবেষণা কার্যক্রমে আরও বেশি করে অনুপ্রাণিত হবেন, যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে।”তিনি আরও জানান, এবারের আয়োজনে ‘বেস্ট রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড’, ‘ডিনস অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হচ্ছে, যা গবেষণার প্রতি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও উৎসাহকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।নোবিপ্রবি রেজিস্ট্রার তামজিদ হোসাইন বলেন,”বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বারের মতো। রিচার্স ফেয়ার আয়োজন হচ্ছে। যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজে মনোনিবেশ করতে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।” নোবিপ্রবির এই গবেষণা মেলা শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাভিত্তিক পরিবেশকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে বলে প্রত্যাশা করছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর