প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী কালীপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। অথচ তার ভয়েই ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অজানা আতঙ্কে ছিল ছাত্র-জনতা। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর প্রথম কয়েকদিন আমিনুল ইসলাম গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও এখন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমিন প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অজানা কারণে তাকে গ্রেপ্তার করছে না।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আমিনুল ইসলাম সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর অনুসারী। ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বাঁশখালীর চাম্বল বাজারে সংঘটিত ছাত্রজনতার ওপর হামলার ঘটনায় সংঘর্ষের পূর্ব মুহুর্তে কালীপুর ইউনিয়নের গুণাগরী মোড় থেকে মিছিল সহকারে যোগ দেন আমিনুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্র-আন্দোলন বিরোধী নানা স্লোগান দেন তারা। পরে চাম্বল বাজার এলাকায় গিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট কালীপুর ইউনিয়নের গুণাগরী মোড়ে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে যোগদান করি। সেদিন আমাদের সাথে যোগ দেয় বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের ছাত্ররাও। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে শতাধিক আওয়ামী কর্মীসমর্থক আমাদের ব্যানারে ছিঁড়ে ফেলে। সেদিন আমাদের কয়েকজনের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। এতকিছুর পরও আমিন এখন বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে।আবদুর রহমান বলেন, গত ৫ আগস্টের পর গ্রেপ্তার এড়াতে আমিনুল ইসলাম এসটি বাংলা টিভি নামের অখ্যাত অনলাইন পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছে। মূলত অপরাধের ঢাকতে সে এই পন্থা অবলম্বন করছে। পুলিশের বিট পুলিশিং সভা ও উপজেলা প্রশাসনের মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিং সহ সর্বক্ষেত্রে এই স্বৈরাচারের দোসরের বিচরণ দেখা যাচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।অভিযোগ উঠেছে, বাঁশখালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলমের ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত আমিনুল ইসলাম ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে নিজেকে কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিচ্ছেন। জুনাইদ সিকদার নামে এক যুবদল নেতা বলেন, “ স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমিনুল ইসলাম স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় থাকাকালিন সময় এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করেছেন। তবে ৫ আগস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে কয়েকদিন সে গা ঢাকা দিলেও বর্তমানে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি এলাকায় বলে বেড়াচ্ছেন, সবকিছু ম্যানেজ হয়ে গেছে।”বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পূর্বে দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে নিজ এলাকায় পুলিশের সহযোগিতায় সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে করিয়েছেন গ্রেপ্তার। রাজনৈতিক পরিচয়ের অপব্যবহার করে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জায়গা দখলসহ নানান অপরাধ মূলক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন আমিনুল ইসলাম।এদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমিনুল ইসলামের বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকটা দায়সারা মনোভাব দেখিয়েছেন বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম। কালীপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, সে তো নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেয়। তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কিনা? এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, দেখা যাক।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর