কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সের দায়িত্ব অবহলোর কারণে আব্দুস সোবহান দুলাল নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা ঘটনায় তদন্তে কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৫ম তলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুস সোবহান দুলাল তাড়াইল উপজেলার রাউতি ইউনিয়নের চেঙ্গুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত সোমবার সকালে পেটের ব্যথা নিয়ে আব্দুস সোবহান দুলাল শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ৫ম তলার ৫০৫৯ নম্বর কেবিনে ভর্তি হয়। ভর্তির পরেরদিন থেকে আব্দুস সোবহান দুলাল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রোগীর স্বজনরা কর্তব্যরত নার্সদের শরণাপন্ন হলে তাদের পাওয়া যায়নি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর একজন নার্স এসে অক্সিজেন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু হয়।নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, আব্দুস সালাম দুলাল মারা যাওয়ার পর তারা চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকলে তাদের পরিচালকের কক্ষে আটকে রাখা হয়। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।রোগীর পরিবারের দাবি, হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সের দায়িত্ব অবহেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসক রোগীকে সময়মতো চিকিৎসা দিলে মৃত্যু হতো না।এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাসিরুজ্জামান নাসিরের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, এ বিষয়ে নিহতের স্বজনরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।এর আগে গত (০৯ ফেব্রুয়ারি) হৃদরোগের চিকিৎসা নিতে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হন বিনয় সেন। ভর্তির পর চিকিৎসায় কিছুটা স্বাভাবিক হন। পরে (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স আয়েশা ছিদ্দিকা বিনয় সেনকে ইনজেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশের ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে বিনয় সেন মারা যান। এই ঘটনার পর রোগীর স্বজন ও বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান। বিষয়টি জানার পর পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এর আগে গত (১৫ জানুয়ারি) কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভুল ইনজেকশন পুশ করায় দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। ওই সময় কটিয়াদী উপজেলার ধুলদিয়া এলাকার ফালু মিয়ার ছেলে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক মনিরুজ্জামান মল্লিক (৩২) মারা যান। এছাড়া খাদ্যনালিতে ছিদ্র থাকায় ব্যথা জনিত কারণে চিকিৎসা নিতে আসা নিকলী উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদিরের ছেলে জহিরুল (২২) মারা যান।সেসময় ভুল ইনজেকশন পুশ করে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় সিনিয়র স্টাফ নার্স নাদিরা আক্তারকে প্রত্যাহারসহ সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অজয় সরকারকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিছুদিন পর পর এমন ঘটনার কারণে হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা আতঙ্কে রয়েছেন।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর