খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন নিত্যদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর বিদ্যুৎ সমস্যার কোন উন্নতি-ই হয়নি বরং দিনদিন নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাধারণ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের, বিশেষ করে গরমের মৌসুমে শুরু হয় তীব্র লোডশেডিং ও শাটডাউন। কখনো কখনো দুই চারদিন পর্যন্তও বিদ্যুৎ বিহীন থাকাতে হয় এই উপজেলার মানুষদের। হালকা বাতাস কিংবা বৃষ্টি হলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া যেন কতৃপক্ষের শিডিউলে পরিনত হয়েছে। তবে শীতের সময়ে বছরের ৬ মাস কিছুটা বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকলেও পরবর্তী সময় গুলো কাটে চরম দুর্ভোগ আর হতাশায়। বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্রই চরম ভোগান্তি শুরু হয়। পানির পাম্প, মোটর,লাইট ফ্যান কিছু চলেনা লোডশেডিং এর ফলে। প্রবীণ ও সচেতন মহলদের অনেকেই ধারণা করছেন, প্রাচীন সাবেক মহকুমা শহর রামগড় পরিবেশগত দিক থেকে যেমনটি উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিলো তার মূলে প্রধান বাধা হচ্ছে এই বিদ্যুৎ সমস্যা। অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা, ব্যবসা বানিজ্যসহ সবকিছুকেই যেন টেনে ধরেছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। খবর নিয়ে জানাযায়,উপজেলার দুইটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ২৭ টি ওয়ার্ডের প্রায় নয় হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক এই সেবার আওতায় রয়েছেন। বিশাল পরিসরে এই পরিসেবা গ্রহন করা এসব মানুষদের রয়েছে পাহাড় সমান অভিযোগও। রামগড় সদর ইউপির খাগড়াবিল এলাকার বাসিন্দা মোঃ সামছুল হক দুলাল জানান, দিনের পর দিন বিদ্যুৎ থাকেনা তাও বিল দিতে হয় রিডিং থেকে অনেক বেশি- বিদ্যুৎ অফিস কখনো মিটারই চেক করেননা,অফিসে বসে মনগড়া বিল ধরিয়ে দেন মাস শেষে, আমিসহ হাজারো মানুষের অভিযোগ রয়েছে রামগড় বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসের বিরুদ্ধে। এছাড়াও সিস্টেম লস, কারিগরী ক্রটি, অব্যবস্থাপনার বিস্তর অভিযোগ থাকলেও নেই ভোগান্তি দূর করণের কোন পদক্ষেপ। গেলো ১৯ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত রামগড় পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড জগন্নাথপাড়া এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানান,ব্যবসায়ী ফকির আহমেদ।সেখানে টানা তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ বিহীন রয়েছে এলাকাবাসী। একপর্যায় তারা বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করতে গেলে তোপের মুখে পড়তে হয় বিদ্যুৎ বিভাগকে। পরে, দ্রুত ঠিক করবেন বলে আশ্বস্ত করেন কতৃপক্ষ। একই সাথে পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড তৈইচালাপাড়া এলাকায় গত ৫ দিন যাবত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে চলমান এসএসসি পরীক্ষার পড়াশোনায় ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনার কথা বলছেন অভিবাবকরা। বিদ্যুৎ না থাকায় পড়াশোনা করতে পারছেনা এলাকার এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। ঘোটা গ্রাম অন্ধকারে নিমজ্জিত গত ৪-৫দিন ধরে এমনটি জানিয়েছেন তৈইচালাপাড়া এলাকাবাসী, এই বিষয়ে কথা বলতে রামগড় বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের একজন কর্মচারী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ বিহীন দুটি এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন সচল করা হয়েছে। বৈশাখী ঝোড়ো আবহাওয়ায় গাছপালায় কিছু লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং ট্রান্সফরমার ক্ষতি গ্রস্তের কারণে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে, দ্রুতই ঠিক কারা হবে। অপরদিকে রামগড়ের সর্বস্তরের মানুষ দাবি তুলছেন , দ্রত সময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রদান ও লোডশেডিং না দেয়া নিশ্চিত করা না হলে অচিরেই বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও এর মত কর্মসূচি দেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন মোঃ শাহজাহান নামের এক গ্রাহক। এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর