মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে ২০২৩ সালের ৯ই অক্টোবর যোগদান করেছিলেন প্রীতম সাহা। চলতি মাসের ২১শে এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন শাখার এক প্রজ্ঞাপনে এই ইউএনওকে বদলি করা হয়েছে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে। একই প্রজ্ঞাপনে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে আনোয়ার হোসেনকে যোগদান করতে বলা হয়েছে। ইউএনও প্রীতম সাহার বদলির আদেশ ঘোষণার পর থেকেই গাংনী উপজেলায় চলছে নানান কাহিনী। ইউএনওর বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে ২২ এপ্রিল সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের ব্যানারে এবং ২৩শে এপ্রিল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যানারে পৃথক দুটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে। তবে অভিযোগ উঠেছে নিজের বদলি ঠেকাতে অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঠে নামানো সহ বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনকে ম্যানেজ করার। স্থানীয় এবং জাতীয় বেশ কয়েকটি পত্রিকা যা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী সময়ের কন্ঠস্বরকে জানিয়েছেন, ইউএনও প্রীতম সাহা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে বদলে গিয়েছে গাংনী উপজেলার বিভিন্ন কার্যক্রম। তিনি সবকিছুতেই যেমন পরিবর্তন এনেছেন তেমনি নিয়েছেন ব্যতিক্রমধর্মী বিভিন্ন উদ্যোগ। উপজেলার প্রতিটি প্রান্তের মানুষের সাথে তিনি নিবিড় ভাবে খুব সহজেই মিশে গেছেন। তাই একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তিনি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা কে ভূলুণ্ঠিত করতে অনেকেই উঠে পড়ে লেগেছে। রাজনৈতিক একটি মহলের বেশ কয়েকজন নেতা নিজেদের পরিচয় না প্রকাশ করা শর্তে সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, বিগত সরকারের সময় থেকেই এই ইউএনও গাংনীতে রয়েছেন। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য শাহিদুজ্জামান খোকন, সাবেক সংসদ সদস আবু সালেহ মোঃ নাজমুল হক সাগর ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক সহ অনেক আওয়ামী লীগ নেতার খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি এখনো বিভিন্ন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের লোকজনের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন তাই তার বদলি খুবই জরুরী। গতকাল বুধবার (২৩শে এপ্রিল) গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, গাংনী উপজেলায় এখন পর্যন্ত যতজন ইউএনও এসেছে তার মধ্যে প্রীতম সাহা সবচেয়ে ব্যতিক্রম। তিনি সব মানুষকে সহজ ভাবে ভালোবাসেন ও সবার কথা শোনেন। সঠিক পরামর্শ ও সমাধান দেন। তার কাছে যেতে কারোর অনুমতিও নিতে হয়না। তাই এরকম একজনকে জনবান্ধব কর্মকর্তাকে আরো কিছুদিন গাংনীতে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান মুক্তিযোদ্ধারা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, আমি সরকারি চাকরি করি। সরকারি চাকরিজীবীদের সরকারের নির্দেশ প্রতিপালন করা দায়িত্ব। এখন সরকার আমাকে যে নির্দেশ দেবেন আমি অবশ্যই সেটি পালন করব। গাংনী উপজেলায় দীর্ঘ দেড় বছর আমি কর্মরত রয়েছি। এখানকার মানুষের আবেগ-অনুভূতি ও ভালোবাসার প্রতি আমি পূর্ণ সমর্থন করি। এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর