চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার অনিয়ন্ত্রিত চলাচল এখন রীতিমতো এক নগরব্যাপী দুর্ভোগের নাম। পরিবহন বিশৃঙ্খলা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি এবং ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম উৎসে পরিণত হওয়া এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) নিয়মিত অভিযান চালালেও বাস্তবে তার প্রভাব সীমিতই থেকে যাচ্ছে।সিএমপি’র চারটি ট্রাফিক বিভাগের তথ্যমতে, চলতি এপ্রিল মাসের শুরু থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন সড়ক ও পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ১৬২টি অননুমোদিত ব্যাটারি রিকশা আটক করা হয়েছে।বিভাগভিত্তিক আটক তালিকার তথ্য অনুযায়ী, ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগ ৯১৩টি, ট্রাফিক উত্তর বিভাগ ৯১৮টি, ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগ ১১৬৮টি এবং ট্রাফিক বন্দর বিভাগ ১৬৩টি অননুমোদিত ব্যাটারিচালিত রিকশা আটক করেছে।এই সংক্রান্তে সিএমপি ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) সুশোভন চাকমা সময়ের কণ্ঠস্বর-কে বলেন, “কমিশনার স্যারের কড়া নির্দেশ রয়েছে আটক রিকশাগুলো যেন কমপক্ষে ২১ দিন ডাম্পিংয়ে রাখা হয়, যাতে করে জরিমানা দিয়ে পুনরায় তারা রাস্তায় নামতে না পারে।”অভিযানে অগ্রগতি থাকলেও এ প্রক্রিয়ায় নানা প্রতিবন্ধকতাও বিদ্যমান। উত্তর বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর কামরুল ইসলাম জানান, “অনেক সময় কিছু নামধারী সাংবাদিক কিংবা রাজনৈতিক পরিচয়ে ব্যক্তিরা রিকশা ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এতে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।”সাম্প্রতিক সময়ে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক এমনকি শাহ আমানত সেতুর উপর পর্যন্ত ব্যাটারি রিকশা অবাধে চলাচল করছে। একজন টোল আদায়কারী বলেন, রিকশাগুলো টোল ছাড়াই সেতু ব্যবহার করছে। এতে আমরা রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি সেতুর ওপর যানজট ও ঝুঁকিও বাড়ছে।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং বিআরটিএ’র কোনো অনুমোদন ছাড়াই ব্যাটারি রিকশার এমন বিস্তার উদ্বেগজনক। প্যাডেল রিকশা মালিক পরিষদ ও সিএমপি’র হিসাবে নগরীতে বর্তমানে আনুমানিক ৫০-৬০ হাজার ব্যাটারি রিকশা চলাচল করছে, যেগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর ৮৮(১) ধারায় বলা আছে, “কোনো যানবাহন নির্ধারিত অথরিটির রেজিস্ট্রেশন ছাড়া রাস্তায় চালানো যাবে না।” এই আইন লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে ৮৯ ধারায় জরিমানা ও জব্দের ক্ষমতা রয়েছে।ব্যাটারি রিকশার পেছনে আরেকটি গোপন অবকাঠামো হলো অননুমোদিত চার্জিং পয়েন্ট। আবাসিক মিটারের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তি এলাকায় খোলা এসব পয়েন্টে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে রিকশাগুলো চার্জ দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র চান্দগাঁও ও বাকলিয়া এলাকায় ৪৭টি অবৈধ চার্জিং পয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। অধিকাংশই আবাসিক মিটারের মাধ্যমে পরিচালিত।নগরীর যেসব থানায় সবচেয়ে বেশি রিকশা চলে তা হলো—চান্দগাঁও, বাকলিয়া, বায়েজিদ, চকবাজার, কর্ণফুলী, খুলশী, কোতোয়ালী, পাহাড়তলী, হালিশহর, আকবরশাহ, ডবলমুরিং, ইপিজেড।এই প্রসঙ্গে সময়ের কণ্ঠস্বরকে চট্টগ্রাম জজকোর্টের এডভোকেট মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ হোসাইনী বলেন, “ব্যাটারি রিকশা একদিকে যেমন সহজলভ্য কর্মসংস্থানের মাধ্যম, অন্যদিকে তা নগর পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিকল্প পরিবহন ও লাইসেন্সিং নীতিমালাও জরুরি।”এআই

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক ওস্তাদ মিহির লালা সাহা আর নেই
স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক ওস্তাদ মিহির লালা সাহা আর নেই

গণমাধ্যমকে মিহির লালা সাহার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী নজরুল সংগীতশিল্পী জয়ন্তী লালা।

উল্লাপাড়ায় ভেজাল মবিল কারখানায় অভিযান, জরিমানা ১ লাখ টাকা
উল্লাপাড়ায় ভেজাল মবিল কারখানায় অভিযান, জরিমানা ১ লাখ টাকা

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌর শহরের ঝিকিড়া মহল্লায় মেসার্স মদিনা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ভেজাল মবিল উৎপাদন কারখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত।রবিবার (১৬ Read more

সীমান্ত পেরোতে গেলেই হতে হয় ধর্ষণের শিকার
সীমান্ত পেরোতে গেলেই হতে হয় ধর্ষণের শিকার

জুনের প্রথম শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার মাত্র কয়েক মিনিট আগে যখন কানি (নামের শেষাংশ) এবং অন্য ১০ জন উত্তর-পূর্ব মালিতে Read more

রেলের বেদখল জমি দ্রুত উদ্ধার করতে বললো সংসদীয় কমিটি
রেলের বেদখল জমি দ্রুত উদ্ধার করতে বললো সংসদীয় কমিটি

রেলের বেদখল জমি উদ্ধারের কাজ দ্রুত শুরু করতে বলেছে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। 

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন