লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থী ও ২৫ হাজারের বেশী মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। মাত্র তিন কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে একটি পাকা সেতুর অভাবে দুই ওয়ার্ডের মানুষ এই ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিমান্তবর্তী বলিরপোল-নাছিরগন্জ সড়কের বাত্তিরখালের উপর মকার পোল নামক স্থানে একটি পাকা সেতু এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। বর্ষা মৌসুমে সেতুটি হয়ে ওঠে আরও ঝুঁকিপূর্ণ। কৃষিপ্রধান এলাকা হওয়ায় স্থানীয় চাষিরাও তাঁদের পণ্য বাজারে আনা-নেওয়া করতে পরিবহন ব্যবহার করতে পারেন না। ফলে তাঁরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।জানা যায়,চরমার্টিন ইউনিয়নের বাত্তিরখাল ও কাটাখালী খালের সাথে মেঘনানদীর সংযোগ স্থল এ স্থানটি। এ দুটি খাল দিয়ে এ অঞ্চলের পানি সরাসরি মেঘনা নদীতে গিয়ে পড়ে। আবার নদীর জোয়ারের পানিও এ দুটি খাল দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে থাকে। কিন্তু এ স্থানে টেকসই সেতু না থাকায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। এর আগে এখানে একটি ব্রীজ ছিল। পরে ব্রীজটি ভেঙে গেলে ২০২৩ সালের দিকে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগরের সহায়তায় এখানে নড়েবড়ে এ কাঠের সাঁকোটি অস্থায়ীভাবে স্থাপন করা হয়। বর্তমানে সাঁকোটি একেবারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।স্থানীয়রা আরও জানান, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাটবাজার। এর মধ্যে উত্তর পশ্চিম চরমার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বলিরপোল কওমী মাদ্রাসা, হাজি মোখলেছুর রহমান মাদরাসা, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা সহ ৭টি জামে মসজিদ ও ৫টি হাটবাজার রয়েছে। বিশেষ করে হাজিপাড়া বাজার, নাজিরগঞ্জ বাজার, বলিরপোল বাজার,মানিকগঞ্জ বাজার ও বটতলা বাজার রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় এক হাজারের অধিক শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার ২৫ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র স্থায়ী পথ হলো নড়েবড়ে এই কাঠের সাঁকোটি।সেতুটি বছরের অধিকাংশ সময় জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকে। অপ্রশস্ত এই সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে চলাচল করা সম্ভব হলেও যানবাহন চলাচল একেবারে দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এতে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় বিক্রয় করার জন্য হাটবাজারে যাওয়া আসা ও মালামাল আনা নেওয়া করতে পারছেনা। শিক্ষার্থীরা সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে পারে না। বর্ষা এলেই তাদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুরুল করিম ও ইউছুফ আলী জানান, এলাকাটি কৃষিপ্রধান হওয়ায় এখানকার কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে পারছিনা। বর্ষা মৌসুম এলেই এ অঞ্চলের মানুষের কষ্টের শেষ থাকেনা।আমরা এখানে একটি সেতুর দাবি করছি।শিক্ষার্থী নিজাম উদ্দিন ও সোহাগ হোসেন বলেন, স্কুলে যেতে কষ্ট হয়। মোটরসাইকেল বা বড় কোন গাড়ী উঠলে কাঠ ভেঙে নিচে পড়ে যায়।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার বলেন, ওই স্থানে একটি সেতু নির্মান এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। আমরা পরিমাপ করে বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তবে এ ব্যাপারে এখনো সাড়া পাওয়া যায়নি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন। খবর নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলব।এআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর