জীবন্ত মানুষের পিঠে লোহার বড়শি গেঁথে বাঁশ কাঠে নির্মিত চড়কির সাথে শূন্যে ঘুরছে মানুষ। আর সেখানে উপস্থিত হিন্দু নারীরা উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে পালন করছেন ধর্মীয় রীতিনীতি। এমন দৃশ্য দেখতেই হাজারো মানুষের ঢল। গতকাল সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের মালিপাড়া এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা যায়।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, চৈত্রের শেষ দিনে এ চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দুইশত বছর ধরে গোয়ালন্দে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই চড়ক পূজা। বংশের ধারা অনুযায়ী প্রায় ৩যুগ ধরে বড়শি পিঠের মধ্যে গাঁথা অবস্থায় শূন্যে ঘুরা এই চড়ক মেলা চালিয়ে যাচ্ছে বাদল কুমার বিশ্বাস। প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও পিঠে বড়শি গাঁথা অবস্থায় বাঁশের চরকিতে ঝুলে ঘুরেন ২জন। তারা হলেন দেবাশীষ বিশ্বাস ও জয় বিশ্বাস। তাদের মধ্যে দেবাশীষ ৯বছর ও জয় ৪বছর যাবদ পিঠে বড়শি গাঁথা অবস্থায় ঝুলেন। তারা বড়শি গাঁথা অবস্থায় ঝুলার পূর্বে এক সপ্তাহ উপবাস করেন।মেলা উদযাপন কমিটির সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব চড়কপূজা। বিভিন্ন নিয়মাবলীর মাধ্যমে এই মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই উৎসব চৈত্র মাসের শেষ দিনে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মেলায় জীবন্ত মানুষের পিঠে মধ্যে লোহার বড়শি গেঁথে বাঁশের চরকিতে বেঁধে ঘুরানো হয়। এসময় উলুধ্বনি, ও ঢাকঢোল পেটানো হয়। এই মেলাটি রাজবাড়ীর মধ্যে সবচেয়ে পুরাতন মেলা এবং সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীদের ভিড় হয় এই মেলার মাঠে।মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, শরীরের মধ্যে বড়শি বিধিয়ে চরকীতে ঘোরা বিষয়টি শুললেই গা শিউরে উঠে। আমরা বাল্যকাল থেকেই চড়ক মেলা দেখতে আসি। শুধু আমরাই নয়, বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষের দেখতে আসে এই চড়ক মেলা।মেলায় গিয়ে দেখা যায়, মেলা উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়েছে। সেই সাথে চড়ক মেলাকে কেন্দ্র করে মেলায় বিভিন্ন রকমারীর দোকান বসেছে। পিঠে বড়শি গেঁথে ঝুলন্ত অবস্থায় শূন্যে ঘুরে ঢোল পিটিয়ে ও বাতাসা ছিটিয়ে শেষ হয় ঐতিহ্যবাহী চড়ক মেলা। এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর