কপিলার সঙ্গে কুবেরের সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ, মার্ক্সবাদী লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কুবের-কপিলার চরিত্র এমনভাবে তুলে ধরেছেন, দোষারোপ দূরের কথা, বরং তা অনিবার্য হয়ে পড়েছে। ব্যক্তি হিসেবে কপিলার জীবনে যা ভুল বা অঘটন ঘটেছিল, তা হলো কপিলার বড় দিদি মালার স্বামী কুবেরের হাত ধরে ময়নাদ্বীপে পালিয়ে যাওয়া।দরবারের অন্য চরিত্রের মধ্যে সিপাহসালারকে রাখা হয়েছে, যাতে করে একটি তরবারি যুদ্ধ দেখানো যায়। সিপাহসালার রাজ্যের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলেও মসনদের প্রতি লোভ তাকে বিপথগামী করে। তাকে বন্দি করা হয়। নবাব ও সিপাহসালার সম্মুখযুদ্ধে নবাব জয় পান।ভাবছেন এটি কিসের কাহিনি ! এটি নাটরের নাটুয়া নাট্টগোষ্ঠীদের অভিনীত নাটক ‘‘নবাবের দরবারে কপিলা’’ । যে টি সোমবার ১৪ এপ্রিল পরিবেশন করা হয়েছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পীরগাছার ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী মেলার মঞ্চে।আবহমানকাল ধরে যাত্রাপালার যে ঐতিহ্য, নবাবি জাঁকজমকপূর্ণ পোশাক, তা ব্যবহার করে দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ‘নবাবের দরবারে কপিলা’ যাত্রাপালায়।যাত্রাপালার আগে প্রভাষক নবাব আলীর সঞ্চালনায় ব্যতিক্রমী কিছু মেধাবী মানুষের উপস্থিতিতে আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন লেখক ও সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শাহানা আখতার জাহান উপ-পরিচালক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর রাজশাহী বিভাগ, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন জনাব আলমাছ উদ্দিন মল্লিক, সহকারি পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, রাজশাহী অঞ্চল, রাজশাহী।আরো উপস্থিত ছিলেন স্বশিক্ষিত কৃষিবিজ্ঞানী নূর মোহাম্মদ, যার নেই কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ। ধান নিয়ে গবেষণা করার জন্য সরকার থেকে আর্থিক সহযোগিতাও পাননি তিনি। স্বশিক্ষিত এই কৃষিবিজ্ঞানী নিজের উদ্যোগেই ধান নিয়ে গবেষণা চালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে তিনি বিভিন্নভাবে হাতে-কলমে কাজ শেখার সুযোগ পেয়েছেন।কৃষি উৎপাদনে সাফল্যের জন্য তিনি ২০০৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক। সেরা কৃষি উদ্ভাবন ক্যাটাগরিতে পেয়েছেন তীর-প্রথম আলো কৃষি পুরস্কার ২০১৮। তিনি নিজের উদ্ভাবিত ২০ জাতের চাল উপহার দিয়েছেন ।উপস্থিত ছিলেন দেশ সেরা কৃষক হাফিজ উদ্দিন মৃধা, যে নিজের মেধা খাটিয়ে ৬ ধরনের পেয়াজের বীজ আবিষ্কার করেছেন। নেই একাডেমিক শিক্ষা । নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই আবিষ্কার করেন এই বীজ। তার মাঝে স্ত্রীর নামের সাথে মিল রেখে একটি জাতের নাম দিয়েছেন রেসমা গোল্ড ।প্রধান আলোচক আবুল কালাম আজাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন তার নিজে এলাকার একটি মেয়ের বলতে না পারা একটি গল্প ও আবৃত্তি করে সুনান তাকে নিয়ে লিখা একটি কবিতা। কবিতাটি এমন ছিলো,“আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কিছুতেই বলেনি কি খেতে ইচ্ছে করছে।শেষ সময়ে শুধু বলেছিলো বলে কি লাভ ! বললেই কি কেউ এনে দিবে? তার আলোচনায় তুলে ধরেছে একাডেমিক সার্টিফিকেট না থাকলে যে ভালো কাজ বা বিজ্ঞানী হওয়া যায় না এমন না। মেয়ে হয়ে জন্মালে যে পিছিয়ে থাকতে হবে। ভালো স্থান বা বড় কিছু হওয়া যায় না এমন ধারণা ভুল ।পরে প্রধান অতিথি জনাব শাহানা আখতার জাহান এর বক্তব্যর মধ্য দিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করা হয়।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর