তীব্র তাপদাহের সময়, বরফ-ঠান্ডা পানি পান করা স্বাভাবিক বলে মনে হয়। তবে, গরম পানি তীব্র তাপদাহেও সুস্থতার একটি ঢাল হতে পারে এবং অভ্যাকি স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। গরম পানি হজমে সহায়তা করা থেকে শুরু করে বিষাক্ত পদার্থ দূর করা পর্যন্ত, এই সহজ অভ্যাস তীব্র গরমেও অনেকগুলো সুবিধা দেয়।গরমকালেও কুসুম গরম পানি পান করা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। নিচে এর কিছু মূল কারণ তুলে ধরা হলো: ১) টক্সিন দূর করে: গরম পানি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ারের মতো কাজ করে। ঠান্ডা পানি রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে, রক্ত সঞ্চালনকে ধীর করে এবং বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে বাধা দেয়। তবে উষ্ণ পানি রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে, রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং লিভার এবং কিডনির মতো অঙ্গগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে বর্জ্য পদার্থ অপসারণে সহায়তা করে। উষ্ণ পানি ঘাম এবং প্রস্রাব বৃদ্ধি করে, এগুলো হলো বিষাক্ত পদার্থ নির্মূলের দুটি মূল উপায়।২) হজমে সহায়তা করে: গ্রীষ্মে পেট ফাঁপা বা ক্র্যাম্পের মতো হজমের সমস্যা প্রায়শই বেড়ে যায়। ঠান্ডা পানি অন্ত্রের সিস্টেমকে ধাক্কা দেয়, পেটের তাপমাত্রা কমায় এবং এনজাইমের কার্যকলাপ ধীর করে। গরম পানি উষ্ণতা বজায় রাখে, হজম মসৃণ রাখে এবং ক্র্যাম্পের ঝুঁকি কমায়। গরম পানি পান করলে তা কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর করে। জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজির একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উষ্ণ পানি গ্রহণের ফলে মলত্যাগের ফ্রিকোয়েন্সি ৪০% বৃদ্ধি পায়।৩) সঠিক হাইড্রেশন: ঠান্ডা পানি তাৎক্ষণিকভাবে তৃষ্ণা নিবারণ করলেও এটি শরীরকে খুব দ্রুত হাইড্রেটেড বোধ করতে প্ররোচিত করতে পারে, যার ফলে অপর্যাপ্ত তরল গ্রহণের সম্ভাবনা থাকে। ধীরে ধীরে পান করা গরম পানি দীর্ঘস্থায়ী হাইড্রেশন নিশ্চিত করে।৪) দেহ ডিটক্স করে: গরম পানি ঘাম বাড়ায়, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ (toxins) বের করে দেয়। গরমকালে দেহের ভেতরের গরম ভাব কমাতেও সাহায্য করে এই প্রক্রিয়া।৫) মেটাবলিজম (Metabolism) বাড়ায়: গরম পানি শরীরের বিপাক হার (metabolism) বাড়িয়ে দেয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।৬) ঠান্ডা-কাশি ও গলা ব্যথা উপশমে কার্যকর: গরমকালেও অনেক সময় গলায় খুসখুসে কাশি বা অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। গরম পানি এই ধরনের অস্বস্তি থেকে রেহাই দেয়।৭) রক্ত চলাচল উন্নত করে: গরম পানি রক্তনালিকে প্রশস্ত করে, ফলে রক্ত চলাচল ভালো হয় এবং হার্টের ওপর চাপ কম পড়ে।গরম পানির উপকারিতা নিয়ে গবেষণা আশাব্যঞ্জক হলেও মিশ্র। NCBI-এর একটি গবেষণায় অন্ত্রের গতিশীলতা উন্নত করতে এবং পেট ফাঁপা কমাতে এর ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে। তবে, কিছু বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেন যে হাইড্রেশনের সুবিধাগুলো ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভর করে। মূল বিষয় হলো ধারাবাহিকতা, যেমন প্রতিদিন গরম পানিতে চুমুক দেওয়া শরীরকে ধীরে ধীরে এর উপকারিতা সর্বোত্তমভাবে অনুকূল করতে প্রশিক্ষণ দেয়।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর