বান্দরবানে সাঙ্গু নদীতে ফুল দিয়ে জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর পূজা এবং ক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহৎ সামাজিক উৎসব বিজু-বিষু।শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৭টায় বান্দরবানের সাঙ্গু নদীতে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের মানুষজন জলবুদ্ধ ও মা-গঙ্গাদেবীকে ফুল নিবেদনের মাধ্যমে বিজু ও বিষু উৎসবের সূচনা করেন।বিজু ও বিষু উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ভোর থেকেই নারী, পুরুষ ও শিশুরা বিভিন্ন স্থান থেকে ফুল সংগ্রহ করে ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে কলাপাতায় সাজানো ফুল নিয়ে জড়ো হন সাঙ্গু নদীর তীরে।পরে মোমবাতি জ্বালিয়ে, ফুল অর্পণ করে অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাঁরা। সেইসঙ্গে প্রার্থনা করেন, অতীতের সব দুঃখ-কষ্ট যেন নদীর স্রোতের মতো ভেসে যায় এবং ভবিষ্যত দিনগুলো শান্তি ও সমৃদ্ধিতে কাটে।এই সময় আগত পূর্ণার্থীরা বলেন, অতীতের ভুলভ্রান্তির জন্য জলবুদ্ধ ও মা গঙ্গাদেবীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে আগামী বছর টা যেন জগতের সকলেই সুখে শান্তিতে থাকতে পারেন এই প্রার্থনা জানিয়ে ফুলবিজু উদযাপন করে থাকি।এদিকে বিজু-বৈসু-বিষু উপলক্ষে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত নানা কর্মসূচির মধ্যে আরো রয়েছে— ১২ এপ্রিল বিকেল ৫টা থেকে রাতব্যাপী রেইচা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা টুর্নামেন্ট। ১৩ এপ্রিল সাংগ্রাইং র্যালি ও বয়স্ক পূজা। ১৪ এপ্রিল বান্দরবানের বৌদ্ধ বিচারগুলোতে বুদ্ধ মূর্তি স্নান, রাতে পিঠা তৈরি, ১৫ এপ্রিল রাজার মাঠে বলি খেলা। ১৬ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল রাজার মাঠে কাঙ্ক্ষিত মারমা সম্প্রদায়ের রিলংবোই (মৈত্রি পানি বর্ষণ খেলা)। এছাড়াও বান্দরবানের সাত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজনে মুখর থাকবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনপদ।উল্লেখ, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি—এই তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত ১১টি জাতিগোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, চাক, ম্রো, খুমী, খেয়াং প্রমুখ। মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব। উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জনপদে বইছে আনন্দের আমেজ।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর