আওয়ামী শাসনামলে নোয়াখালীতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার বাদী আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট ওমর ফারুক এখনো এলাকায় দখলদারিত্ব ও জোর জুলুম, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর প্রতিবাদে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এলাকাবাসীরা এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় দুজন গুরুতর আহতসহ মোট সাত জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হামলার নেপথ্যে চর জব্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ও তার বড় ভাই চর জব্বার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ মিয়ার প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মানববন্ধনকারীরা।বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানবন্ধনে এই ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ করে।সংঘর্ষে আহতরা হলেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন (৫৫), স্থানীয় যুবদল কর্মী রাকিব জিয়া (২৭), স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন মিয়া (২৬), যুবদল নেতা মো. শরীফসহ (৩৫) আরো ৩ জন।মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ডা. মো. শাহজাহান, মো. কামাল উদ্দিন, জাকির হোসেন, মো. রায়হান, ভুট্ট মাঝি প্রমূখ।মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ওমর ফারুকের বড় ভাই স্থানীয় চরজব্বর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা হয়েও আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে আতাত করে বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেকে আড়ালে রেখে গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের সকল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আবদুল্যাহ মিয়া এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে নোয়াখালী পৌর যুবদল নেতা জাকির হোসেনের ৪ একরের একটি মৎস্য খামার, স্থানীয় ব্যবসায়ী সাহাব উদ্দিনের ৩ একরের একটি মৎস্য খামার, নাছের আহাম্মদের ২ একর জমি, আবদুল হাইয়ের ২ একর জমি, ইলিয়াছ মিয়ার ২ একর জমিসহ ১৬জন ব্যক্তির প্রায় ৩০ একর জমি জোরপূর্বক দখল, খামারের মাছ লুট, চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছেন।বক্তারা আরো বলেন, আবদুল্যাহ মিয়া ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর উদ্যোগে আজ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়ান এলাকার কয়েক’শ নারী-পুরুষ। এসময় আবদুল্যাহ মিয়ার অনুসারী সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ মানববন্ধনে বাধা দিয়ে হামলা করে। এতে মানববন্ধনকারীরা তাকে পিটিয়ে প্রতিহত করলে আকাশ ফোন দিয়ে তার লোকজন জড়ো করে পুনরায় মানববন্ধনকারীদের ওপর হামলা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ৪ মানববন্ধনকারীসহ ৭জন আহত হয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহদের মধ্যে ৩জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।সুবর্ণচর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আবুল খায়ের আকাশ জানান, মানববন্ধনকারীরা পরিকল্পিতভাবে নিজেদের মানববন্ধনে বিশৃঙ্খলা তৈরী করে আমাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্যাহ মিয়া অভিযোগের বিষয়ে জানান, স্থানীয় কিছু লোক আমাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর