পাবনার সুজানগরে মাত্র ৪ মাস বয়সি দুধের শিশুকে বাইরে রেখে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) সমমান পরীক্ষায় বসেছেন মা মোছা. মিতা খাতুন। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) শুরু হওয়া এ পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ফলে কেন্দ্রের বাইরে বাবা ইমরান আলীর কোলে বসে মায়ের অপেক্ষায় ছিল জামিল ভান্ডারী নামের দুধের শিশুটি। জানা গেছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার জাহানারা কাঞ্চন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মিতা। সুজানগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় (ভোকেশনাল) কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে ছোট্ট শিশুকে কোলে নিয়ে বসে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে মিতার স্বামী অ্যাডভোকেট ইমরান আলী বলেন, আমার স্ত্রী হলে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাই ৪ মাস বয়সি বাচ্চাকে আমি কোলে নিয়ে এখানে অপেক্ষা করছি। কারণ ছোট্ট বাচ্চা ক্ষুধায় যেকোনো সময় কাঁদতে পারে। পরীক্ষা শেষে মিতা খাতুন জানান, তার বাড়ি সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের ঘোড়াদাহ গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত মঙ্গল খান। ২ বছর আগে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় তার বিয়ে হয়। তার স্বামী পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি বলেন, বিয়ের পরও যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারি এজন্য আমার স্বামীর পরামর্শে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। পরীক্ষায় যেন ভালো ফলাফল করতে পারি সেজন্য পরিবারের সবাই মিলে আমাকে সহযোগিতাও করছেন। দুধের শিশু নিয়ে একজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে- বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্র সচিব দিলীপ কুমার। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সোলায়মান হোসেন জানান, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ওই শিক্ষার্থী কেন্দ্রের ১৪ নাম্বার কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন। এদিকে পরীক্ষা কেন্দ্রের আলাদা একটি কক্ষে ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন পরীক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো পরীক্ষার্থীর দুধের শিশু বাচ্চা থাকলে যতবার বাচ্চার প্রয়োজন ততবার তার মা যেন তাকে দুধ পান করাতে পারেন- এজন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে আলাদা একটি কক্ষে ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে নিয়ম-নীতির আলোকে কেন্দ্র সচিবদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।এফএস
Source: সময়ের কন্ঠস্বর