পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সেই ইউএনও মিজানুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) সোহরাব হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। টানা ছয় দিনের আন্দোলন, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির পর অবশেষে সফল হলো গলাচিপার ছাত্র-জনতার দাবি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমানকে গলাচিপা থেকে বদলি করে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় পদায়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলার ইউএনও মো. আব্দুল কাইয়ুমকে গলাচিপার নতুন ইউএনও হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।এর আগে, ইউএনও মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ধাপে ধাপে ছড়িয়ে পড়ে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। এছাড়াও খাদ্য বান্ধব ডিলার ও ওএমএস ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ও টাকা লেনদেনর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে ডিলার নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হয়।গত (১৭ মার্চ) ছিল আন্দোলনের ষষ্ঠ দিন, যেদিন শহরের জৈনপুরী খানকা ময়দান থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে ইউএনও’র অপসারণের জোর দাবি জানানো হয়।অবশেষে প্রশাসন বদলির আদেশ দিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সাড়া দিয়েছে। এ নিয়ে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সন্তোষ বিরাজ করছে। তারা বলছেন, “এটা আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনের জয়। জনগণের ঐক্যই সবচেয়ে বড় শক্তি।”আন্দোলনের সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম মুন্না বলেন, এই জয় গোটা গলাচিপাবাসীর। আমরা শুরু থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে গেছি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দুর্নীতিবাজ ইউএনওকে অপসারণ করা। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে প্রমাণিত হলো, জনগণের দাবির প্রতি রাষ্ট্রেরও শ্রদ্ধা আছে।শাহ জুবায়ের আবদুল্লাহ বলেন, গলাচিপার মানুষের ওপর দীর্ঘদিন ধরে যে অবিচার হচ্ছিল, তা আজ শেষ হলো। আমরা চাই, নতুন ইউএনও জনকল্যাণে কাজ করবেন এবং প্রশাসনকে রাজনীতিমুক্ত রাখবেন। গলাচিপা যেন আর কখনো স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির শিকার না হয়। আমরা শহরে আনন্দ মিছিল করবো।এদিকে নতুন ইউএনও আব্দুল কাইয়ুম শিগগিরই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর