বন্দরনগরী চট্টগ্রাম সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর। পাহাড়, সমুদ্র আর নদীর অপূর্ব সমন্বয়ে গঠিত এ নগরের বুকজুড়ে দিনে দিনে গড়ে উঠেছে আকাশচুম্বী অট্টালিকার সারি। কিন্তু এই দৃশ্যমান উন্নয়নের পেছনে লুকিয়ে আছে এক ভয়াবহ আশঙ্কা ভূমিকম্প।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি চট্টগ্রামে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তবে নগরের অন্তত ২ লাখ ৬৭ হাজার ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এর তথ্যমতে, নগরে বর্তমানে ভবনের সংখ্যা ৩ লাখ ৮২ হাজারের বেশি। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।চট্টগ্রাম শহরের ভবনগুলোর অধিকাংশই নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) উপেক্ষা করে। সিডিএর নিয়ম অনুযায়ী, ভবন নির্মাণে ৮টি পর্যায়ের অনুমোদন প্রয়োজন। তবে বাস্তবে অধিকাংশ ভবন শুধুমাত্র নকশা অনুমোদন নিয়েই নির্মাণ সম্পন্ন করছে। প্লিন্থ স্তরের প্রতিবেদন, কারিগরি অনুমোদন, ব্যবহার সনদ প্রাপ্তির মতো পরবর্তী ধাপগুলো অনেক সময়ই উপেক্ষিত। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষের বিনিময়ে এসব নিয়ম কাগজে-কলমে রূপান্তরিত হচ্ছে।ফলে নগরে গড়ে ওঠা এই বিপুল সংখ্যক ভবনের অধিকাংশেই ভূমিকম্প প্রতিরোধী কোনো ব্যবস্থা নেই। যেমনটি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, নগরের ৭০ শতাংশ ভবনই ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ধসে পড়তে পারে। এ ধরনের বিপর্যয়ে চট্টগ্রাম চরম বিপন্ন হয়ে পড়বে।সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সময়ের কণ্ঠস্বর-কে সরল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। আগে তদারকিতে ঘাটতি ছিল এ কথা সত্য। এখন আমরা নিজেরা ১০ তলার নিচে ভবন পরিদর্শন করি, উচ্চতর ভবনের জন্য বিশেষজ্ঞ মতামত নিই।তবে এতে আশ্বস্ত নন নগর পরিকল্পনাবিদরা। কারণ, চট্টগ্রামের বহু ভবন গড়ে উঠেছে ঘিঞ্জি বসতিতে ও সরু গলিতে, যেখানে দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী যানবাহনের প্রবেশই সম্ভব নয়।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, উদ্ধার তৎপরতার জন্য নীতিমালা থাকলেও কার্যকর প্রস্তুতি নেই। যন্ত্রপাতির স্বল্পতা, প্রশিক্ষণের অভাব এবং নগরের অগোছালো গঠন দুর্যোগ–পরবর্তী পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।একই সুরে সতর্ক করছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২০০৯–২০১১ সালের জরিপের নেতৃত্বদানকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর মতে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ক্লিনিক অর্থাৎ জরুরি সেবাদানকারী অবকাঠামোগুলো।সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে ৬.৯৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ১২টি ভবন হেলে পড়েছিল। তারও আগে, ১৯৯৭ সালের ২১ নভেম্বর ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে একটি পাঁচতলা ভবন ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবুও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়নি।এসআর

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
মেয়ের ভালো পাসে অশ্রুসিক্ত ভ্যানচালক বাবা, দুশ্চিন্তা কলেজে পড়া নিয়ে
মেয়ের ভালো পাসে অশ্রুসিক্ত ভ্যানচালক বাবা, দুশ্চিন্তা কলেজে পড়া নিয়ে

মিতা খাতুন এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে।

টিভিতে আজকের খেলা
টিভিতে আজকের খেলা

ক্রিকেট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ মোহামেডান-ব্রাদার্স

টানা চতুর্থবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া
টানা চতুর্থবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাজিয়া

টানা চতুর্থবারের মতো উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া।

সিরাজগঞ্জে প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রশিক্ষণ কর্মশালা 
সিরাজগঞ্জে প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রশিক্ষণ কর্মশালা 

লিড ব্যাংক হিসেবে দি প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি’র আয়োজনে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর সহযোগিতায় সিরাজগঞ্জের সব তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন