ছাগল খোঁয়াড়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে দুই পক্ষের মোট পাঁচজনকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শালডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) রাব্বি হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার শালডাঙা ইউনিয়নের অমরখানা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় কৃষক লিপন ইসলাম, তার ভাই স্বপন ইসলাম ও আব্দুর রাজ্জাক এবং অপর পক্ষের জুয়েল হক ও বাবলু হক—তিনজনই ইউপি সদস্য রাব্বি হোসেনের ভাই।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য রাব্বি হোসেনের ছাগল গিয়ে লিপন ইসলামের মরিচ ক্ষেত নষ্ট করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লিপন দুটি ছাগল খোঁয়াড়ে দিয়ে আসে। এরপর রাব্বি ও তার লোকজন খোঁয়াড় থেকে ছাগল ছাড়িয়ে এনে আবারও মরিচ ক্ষেতে ছেড়ে দিয়ে ওঁৎ পেতে থাকে। লিপন ছাগল ধরতে গেলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় লিপনের দুই ভাই ঘটনাস্থলে এলে তারাও মারধরের শিকার হন।গুরুতর আহত অবস্থায় লিপন ও তার ভাইদের দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের রংপুর মেডিক্যালে পাঠান। একইভাবে রাব্বির ভাই জুয়েল ও বাবলুকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখানে পাঠানো হয়েছে।আহতের ভাই লিটন ইসলাম ৯ জনের নাম উল্লেখ করে শুক্রবার রাতে দেবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। রাতেই প্রধান আসামি রাব্বি হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।তবে গ্রেফতারকৃত ইউপি সদস্য রাব্বির স্ত্রী সাবিনা আক্তার দাবি করেছেন, “ঘটনার সময় রাব্বি বটতলী এলাকায় খালেক ডাক্তারের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাঁকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।” শনিবার সকালে তাদের বাসায় প্রতিপক্ষরা হামলা করে বলে অভিযোগ করেন রাব্বীর স্ত্রী।এইদিকে রাব্বী জামায়াত ও লিটনরা বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত হওয়ায় বিষয়টি দলীয় উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জামায়াতের উপজেলা সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন দাবি করেন, শুক্রবার রাতে রাব্বী তার ভাইদের খোঁজ নেওয়ার জন্য হাসপাতালে গেলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা তার উপর চড়াও হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুলিশকে জানালে তৎক্ষনাৎ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাব্বীকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। শালডাঙ্গায় দুপুরে ঘটনার সময় রাব্বী তাদের সাথে বটতলিতে বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি।যদিও মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিএনপি’র একাধিক নেতা-কর্মী। তারা দাবি করে বলেন, আমরা আমাদের আহত কর্মীদের চিকিৎসা এবং তাদের রংপুরে পাঠানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি।দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আবু নেমান বলেন, “আহতদের মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল, তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রেফার করা হয়েছে।”এ বিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে। প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর