বরিশাল চুরির অপবাদে দুই যুবককে বেধে নির্যাতন করেন কতিপয় ব্যাক্তি। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।রবিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রীজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এক মিনিট চৌদ্দ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় পৃথকভাবে দুইজনকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। যাদের একজন মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তাকে এক ব্যাক্তি শক্ত তার দিয়ে পেটাচ্ছ।জানা গেছে, দোকান থেকে লোহার পাত চুরির অভিযোগে মিঠুন (২০) ও লিংকন (২৩) নামে দুই যুবককে হাত-পা বেঁধে প্রকাশ্যে নির্যাতনের করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার দুই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নির্যাতন করা অভিযুক্তদের মধ্যে একজন দোকান মালিক মো. হাসানকে আটক করেছে থানা পুলিশ।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন শিকদার।নির্যাতনের শিকার দুই যুবক হলেন, বাবুগঞ্জ উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামের চান মুন্সির ছেলে মিঠুন ও একই গ্রামের বাবুল বেপারীর ছেলে লিংকন।আটক দোকান মালিক হাসান রহমতপুর ব্রিজ এলাকার সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং নামের দোকানের মালিক এবং উপজেলার দোয়ারিকা গ্রামের বাসিন্দা।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-এর সূত্র ধরে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাতে রহমতপুর ব্রিজের উত্তর পার্শ্বের ঢালে সেবা ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি দোকান থেকে বেশ কিছু লোহার পাত চুরি হয়। সকালে দোকান মালিক হাসান এসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন পাশের ভাঙারী ব্যবসায়ী সাইদুল চোরাই লোহার পাত কিনেছে। পরে সাইদুলের স্বীকারক্তি অনুযায়ী মিঠুন ও লিংকনকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন দোকান মালিক হাসান ও স্থানীয় কিছু লোকজন।ভিডিওতে দেখা যায়, এক যুবককে প্রচন্ড রোদের মধ্যে উপুর করে হাত-পা বেঁধে মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর পেছনে ঘুরে ঘুরে তার পায়ে লোহার রড দিয়ে পেটাচ্ছেন দোকান মালিক হাসান।অপর যুবককে মারধর করে পাশেই একটি বিদ্যুতের খুটির সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। দোকান মালিকের সঙ্গে এক নারী এবং স্থানীয় আরও কয়েকজন ব্যক্তি দুই যুবককে মারধরসহ নির্যাতনে সহযোগিতা করছে। উৎসুক জনতা চারপাশে দাঁড়িয়ে তা উপভোগ করছে।এ প্রসঙ্গে দোকান মালিক মো. হাসান বলেন, আমার দোকানের মালামাল চুরি করে পাশের ভাঙারী দোকানে ৪-৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। ভাঙারি দোকান মালিক এবং অভিযুক্ত দুই যুবকও চুরির কথা স্বীকার করেছে। পুলিশে না দিয়ে কেন নির্মম নির্যাতন করা হলো? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি হাসান।বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি জাকির হোসেন শিকদার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই যুবককে ছেড়ে দিয়েছে। চুরি করা যেমন অপরাধ, চোর ধরে আইনের হাতে তুলে না দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা আরেকটি অপরাধ। এ কারণে রবিবার বিকেলে অভিযুক্ত দোকান মালিককে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর