রাজশাহী শহরে পুকুর ভরাট ও শহরের বাইরের এলাকায় পুকুর খনন এখন যেন নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর আগেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কিছু কাজ বন্ধ করা গেলেও এখন সেই চিত্র বদলেছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়া এবং স্বার্থান্বেষী মহলের যোগসাজশে জলাশয় ধ্বংসের এই ধারা ভয়ংকর রূপ নিয়েছে।গণমাধ্যমকর্মীরা প্রতিবেদন প্রকাশ করলেও প্রভাবশালী মহল এতে কোনো তোয়াক্কা করছে না। প্রশাসনের নীরবতা, রাজনৈতিক দলের মদদ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও স্থানীয়দের অসহায়ত্বের সুযোগে দখলদাররা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে চলেছে।লিলি হলের মোড়, চন্দ্রিমা থানার সামনের এলাকা, র‍্যাব অফিসের পেছনসহ বিভিন্ন জায়গায় পুকুর ভরাটের খবর আসছে প্রতিনিয়ত। সাংবাদিকরা এসব ঘটনা তুলে ধরলেও প্রশাসন একবারে নীরব। ডিসি (জেলা প্রশাসক) গণমাধ্যমকে প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না। ফোন করলেও ধরেন না, বক্তব্য নিতেও বাধা দেওয়া হয়।স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ করলেও প্রশাসনের উদাসীনতা এবং রাজনৈতিক চাপের কারণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যারা মাঠে নেমে প্রতিবাদ করছে, তাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা এখানে প্রশ্নবিদ্ধ। একদল যখন পুকুর ভরাট করছে, অন্যদল চুপচাপ দেখছে বা সুযোগের অপেক্ষায় আছে। কিছুক্ষেত্রে দেখা গেছে, পুকুর রক্ষার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও, কয়েকদিনের মধ্যেই তারাই সেই প্রকল্পের অংশীদার হয়ে গেছেন।বিশেষ করে চন্দ্রিমা থানার সামনের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় প্রকাশ্যে পুকুর ভরাটের ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নেই। প্রশাসন ও রাজনীতির ইশারায় এই কাজ চলছে বলেই স্থানীয়দের অভিযোগ। পুলিশ কখনো সরাসরি সহযোগিতা করছে, কখনো নীরব ভূমিকা পালন করছে।কিছু রাজনৈতিক সংগঠন মাঝে মাঝে মানববন্ধন করলেও তা লোক দেখানো ছাড়া কিছুই নয় বলে মনে করছেন পরিবেশ আন্দোলনকারীরা। আন্দোলনের নাম করে মানুষ দেখানো হয়, কিন্তু প্রকৃত কাজ হয় ক্ষমতার ভাগ-বাটোয়ারার জন্য।এদিকে, স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, কিছুদিন আগে একটি পুকুর রক্ষার জন্য আন্দোলন হয়েছিল, কিন্তু এখন সেই আন্দোলনকারীদের অনেকেই দখলদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন।পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রশাসনকে সম্পূর্ণ ভরসা করা আর ভুল। কারণ প্রশাসনের ভেতরেই অসৎ কর্মকর্তারা রয়েছেন, যারা লোভের কাছে নতি স্বীকার করেছেন। তবে প্রশাসনের ভেতর এখনো কিছু সৎ কর্মকর্তা রয়েছেন, কিন্তু তারা একা লড়াই করে কিছু করতে পারছেন না।রাজশাহীকে রক্ষা করতে হলে এলাকাবাসীকেই সোচ্চার হতে হবে। রাজনীতির মঞ্চে পরিবর্তনের জন্য যত আন্দোলন হয়, পরিবেশ রক্ষার জন্য ততটা হয় না। যদি সবাই একত্রে না জোটে, তবে পুকুর দখল ও ফসলি জমি হত্যা চলতেই থাকবে। এখনই প্রতিরোধ না গড়লে, রাজশাহীর ভবিষ্যৎ ভয়াবহ হবে। শহরের পানি সংকট আরও তীব্র হবে, আর আমাদের পরিবেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে।লেখক: মানিক হোসেন।পিএম

Source: সময়ের কন্ঠস্বর

সম্পর্কিত সংবাদ
আইনজীবীর ওপর হামলা এবং আদালত ঘিরে আরো যত উদ্বেগ
আইনজীবীর ওপর হামলা এবং আদালত ঘিরে আরো যত উদ্বেগ

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী আদালত প্রাঙ্গনে আসামীদের উপর হামলা আক্রমণের ঘটনা থামলেও সার্বিকভাবে আদালতের পরিবেশ এখনো সন্তোষজনক নয় বলে মনে করছেন আইনজীবীদের Read more

চট্টগ্রামে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন অর্ধশত জলদস্যু
চট্টগ্রামে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন অর্ধশত জলদস্যু

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের অর্ধশত জলদস্যু অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ চট্টগ্রামে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন। 

ডাম্বুলা থান্ডার্সের আইকন প্লেয়ার মোস্তাফিজ
ডাম্বুলা থান্ডার্সের আইকন প্লেয়ার মোস্তাফিজ

জুলাই মাসে মাঠে গড়াবে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ। তার আগে আজ সোমবার বাংলাদেশের তারকা পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে

এলাকায় ফিরতে টাকা দিতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের, হচ্ছেন হামলার শিকার
এলাকায় ফিরতে টাকা দিতে হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের, হচ্ছেন হামলার শিকার

বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের যেসব নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছিলেন, পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে Read more

ডিএমপিতে পেনশন অ্যান্ড রিটায়ার্ড সার্ভিস সেকশন চালুর ঘোষণা 
ডিএমপিতে পেনশন অ্যান্ড রিটায়ার্ড সার্ভিস সেকশন চালুর ঘোষণা 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান ডিএমপি থেকে অবসরে যাওয়া পুলিশ সদস্যদের অবসর-পরবর্তী সব সেবা নির্বিঘ্ন করতে পেনশন অ্যান্ড Read more

আমরা নিরপেক্ষ নই ,    জনতার পক্ষে - অন্যায়ের বিপক্ষে ।    গণমাধ্যমের এ সংগ্রামে -    প্রকাশ্যে বলি ও লিখি ।   

NewsClub.in আমাদের ভারতীয় সহযোগী মাধ্যমটি দেখুন