বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রশাসনের প্রধান H. E. Li Qun ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর এবং কুসুম্বা মসজিদ পরিদর্শন করেছেন। চীনা প্রতিনিধিরা এ সফরকে দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রশাসনের প্রধান H. E. Li Qun-এর নেতৃত্বে একটি ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল শনিবার সকালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত নওগাঁর বদলগাছীতে অবস্থিত পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ও জাদুঘর পরিদর্শন করেন। আর দুপুরে জেলার মান্দায় অবস্থিত কুসুম্বা মসজিদ পরিদর্শন করেন। এসময় নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান প্রতিনিধি দলকে স্বগত জানান।পরিদর্শনকালে চীনা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে চীন-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়বে।এ সময় চীনা উপমন্ত্রী Li Qun বলেন, বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। চীন এবং বাংলাদেশ যৌথভাবে গবেষণা ও সংরক্ষণের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যকে আরও বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পারে।”চীনা প্রতিনিধিরা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সংরক্ষণ কার্যক্রম পর্যালোচনা করেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষণ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতে কারিগরি ও গবেষণাগত সহায়তা বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেন।এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংরক্ষণে চীনের সহযোগিতা নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের সংরক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।এ প্রসঙ্গে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, “সাংস্কৃতিক বিনিময় ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনা প্রতিনিধি দলের এই সফর আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”চীনা প্রতিনিধি দলের এ সফর বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব গবেষণা, ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। বাংলাদেশ সরকার এবং চীন যৌথভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে কাজ করলে ভবিষ্যতে ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও পর্যটন খাতের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।এসময় বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান ছনি, পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম আরজু এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর