নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মো. ইব্রাহিম ওরফে মন্টু (৫৫) নামে এক মুদি দোকানির বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই ওই অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। ধর্ষক ইব্রাহিম সুনামগঞ্জ জেলার বিঞ্চামপুর এলাকার আব্দুল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে রূপসী বাঘবাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া।জানা গেছে, চকলেট কিনে দেওয়ার প্রলোভনে ইব্রাহিম (৫৫) নামে এক ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রূপসী বাগবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটায়। পরে রাতে ধর্ষিত শিশুর বাবা মাকে হুমকি ধামকি দিয়ে ৫ হাজার টাকা রফাদফা করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়। পরে রাত ১১টার দিকে এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে ধর্ষক ইব্রাহিমের বাড়ির সামনে ইব্রাহিমকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। এদিকে, খবর পেয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের (গ সার্কেল) সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী ঘটনাস্থলে এসে ধর্ষিত শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, শিশুটির পরিবার রূপসী বাঘবাড়ি এলাকায় বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ইব্রাহিম রূপসী বাগবাড়ি ব্রিজ এলাকায় কাচাঁমালের ব্যবসা করেন। ইব্রাহিম শিশুটিকে চকলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে তার দোকানের ভেতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় প্রতিবেশী জালালের স্ত্রী ইব্রাহিমের দোকানে শুটকি কিনতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি দেখে স্থানীয়দের খবর দেন। এছাড়া শিশুটিও তার বাবা মাকে বিষয়টি জানায়। শিশুদের বাড়িওয়ালা তানসেন, রুবেল ও স্থানীয় প্রভাবশালী পলিনসহ কয়েকজন মিলে ধর্ষণের বিষয়টি ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ হাজার টাকা শিশুর পরিবারকে দিবেন বলে আশ্বাস দেন। রাত ১১টার দিকে এলাকাবাসী ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পেরে রুবেলের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে বাড়িটি ঘিরে রাখেন। এ সময় উত্তেজনা বাড়তে দেখে রুবেল ও তানসেন মিলে ইব্রাহিমকে বাড়ি থেকে বের হয়ে পালাতে সহযোগিতা করেন। রাত ১২টার দিকে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের (গ সার্কেল) এর সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলীসহ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পৌছাঁন। শিশুটির বাবা বলেন, তাঁদের বাসা রূপসী বাগবাড়ি এলাকায়। তিনি দিনমজুর। শিশুটির মা একটি কারখানায় কাজ করেন। তাদের বাসার পাশেই একটি মুদিখানা রয়েছে। ওই মুদি দোকানদারের নাম ইব্রাহিম (৫৫)। গতকাল দুপুর ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে খেলতে খেলতে দোকানের সামনে যায় শিশুটি। তখন ওই মুদি দোকানদার তাকে দোকানের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিকেল ৫টার দিকে আমি কাজ থেকে এসে শুনতে পারি আমার ৭ বছরের মেয়েকে ইব্রাহিম ধর্ষণ করেছে। আমি এখানে ভাড়া থাকি। বাড়িওয়ালা তানসেন ও রুবেলসহ কয়েকজন মিলে আমাকে চাপ দিয়ে ৫ হাজার টাকার দিবে বলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলেন। আমি মেয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চাই। এদিকে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ ) রাত পৌনে দুইটার দিকে ওই শিশুকে অসুস্থ অবস্থায় আনা হলে শিশুটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার তার ফরেনসিক পরীক্ষার কথা হয়েছে।এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের (গ সার্কেল) এর সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাতে ওই শিশুটিকে স্বজনেরা থানায় নিয়ে আসে। শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাৎক্ষণিক আমরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। বর্তমান শিশুটি হাসপাতালে ওসিসিতে ভর্তি আছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। আসামি পলাতক, তাঁকে ধরার চেষ্টা চলছে।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়ক ডা. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, গতরাতে রূপগঞ্জের শিশুটি ভর্তি হয়েছে। শিশুটি সুস্থ আছে। আগামীকাল শিশুটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে। এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর