উচ্চশিক্ষা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন, কিন্তু সেই স্বপ্ন যখন আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে, তখন তা হতাশার জন্ম দেয়। রাজশাহী কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা এখন সেই হতাশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, তাদের অভিযোগ— অন্যান্য সরকারি কলেজের তুলনায় রাজশাহী কলেজের ফরম ফিলাপ ফি কয়েক হাজার টাকা বেশি। যা অনেকের জন্য পরিশোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থায়, ফি কমানোর দাবিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেছে।রাজশাহী কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অনেকেই বাবা-মায়ের আয়ের ওপর নির্ভরশীল, কেউ কেউ নিজের খরচ নিজেই চালান টিউশনি বা পার্ট-টাইম কাজ করে। তাদের জন্য অতিরিক্ত ফি দেওয়া একপ্রকার অসম্ভব।শিক্ষার্থীদের দাবি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা অন্যান্য সরকারি কলেজের তুলনায় রাজশাহী কলেজের ফরম ফিলাপ ফি অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এটি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি অমানবিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন তারা।ছাত্রদল নেতাদের মতে, গত বছর ফরম ফিলাপ ফি কমানোর বিষয়ে কলেজ প্রশাসন আশ্বস্ত করেছিল যে ২০২৫ সাল থেকে ফি কমানো হবে। কিন্তু এবারও ফি কমেনি, বরং প্রশাসনের ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ (আবির) বলেন, “গত বছরও আমরা এই দাবি জানিয়েছিলাম। তখন আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে আগামী বছর ফি কমবে। কিন্তু এবারও তা কার্যকর হয়নি। এখন প্রশাসন বলছে, কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়, তাই ফি বেশি রাখা হয়েছে। আসলে এসব কোনো যৌক্তিক যুক্তি নয়। আমরা এর যৌক্তিক সমাধান চাই।”শিক্ষার্থীদের দাবি, রাজশাহী কলেজের মতো দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে এমন আর্থিক চাপ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা চান, প্রশাসন শিক্ষার্থীবান্ধব মনোভাব নিয়ে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুক।শিক্ষার অধিকার সবার জন্য সমান হওয়া উচিত। কিন্তু উচ্চ ফি অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীকে পিছিয়ে দিতে পারে। রাজশাহী কলেজ প্রশাসন যদি শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়, তবে তা হবে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।শিক্ষার্থীরা আশাবাদী, প্রশাসন তাদের সংকটের বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, যাতে অর্থনৈতিক কারণে কারও শিক্ষা বাধাগ্রস্ত না হয়। এখন দেখার বিষয়, কলেজ কত দ্রুত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়।এমআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর