পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ আলতাফ হোসেনকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দিয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক আইনজীবী। গত শনিবার বিকেলে মোবাইল ফোনে ওই হুমকি দিয়েছেন ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়। এর আগে গত সোমবার বিকেলে ওই শিক্ষক জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বাউফল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। জাহাঙ্গীর হোসেন বিএনপি দলীয় পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও তিনি পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর।মানববন্ধনের সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ও বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহনকারীরা আইনজীবী জাহাঙ্গীরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। ওই শিক্ষককে দেওয়া হুমকি ও গালাগালের কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইসলাম ধর্ম আলতাফ হোসেন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে তিন জনের তালিকা পাঠিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কমিটির সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন। তালিকায় জাহাঙ্গীরের নাম প্রস্তাব না করায় তিনি আমাকে দায়ী করে হত্যার হুমকি দেয় এবং অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছেন এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।এদিকে ভাইরাল কল রেকর্ড প্রসঙ্গে আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কল রেকর্ড ভাইরাল হওয়া ভালো, এতে অসুবিধা নেই। সে গালমন্দ পায় দেখে তাকে গালাগাল করেছি। আলতাফআমার ছোট ভাইর থেকে বিমা করার জন্য তিন লাখ টাকা নিছে। সেটা ফেরত দেয় না, তাই গালমন্দ করেছি। তার মাইরে মাফ নাই। টাকা ফেরত দিবে, নইলে মাইর খাইবে সোজা কথা।সভাপতি মনোনয়ন সংক্রান্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, এখানে সভাপতি সংক্রান্ত বিষয় নাই। এখন না হই, ছয় মাস পরে সভাপতি হবো। স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ সভাপতি হিসেবে তিনজনের নাম দিছে, তার নাম দেয় নাই। এখন এটাতো আর শেষ নয়, সামনে দল (বিএনপি) ক্ষমতায় আসলে ডিসির অনুমতিও লাগবে না। ছয় মাস অপেক্ষা ধরতে তার অসুবিধা নেই। আলতাফকে একটা জিডি কইরা মামলা করতে বলেন। খুনের হুমকির ধারায় মামলা করতে পারবে, তাতে জাহাঙ্গীর উকিলের কিছু হয় না।এ বিষয়ে ইন্দ্রকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জাহাঙ্গীর তাকেও গালমন্দ করেছে এবং হুমকি দিয়েছিলেন। কমিটির সভাপতি মনোনয়নের বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মহোদয় যাচাই-বাছাই করে সভাপতি মনোনয়ন দেন।বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Source: সময়ের কন্ঠস্বর