কক্সবাজারের চকরিয়ার ক্যামব্রিয়ান স্কুলে অতর্কিত হামলায় দুই শিক্ষক, এক ছাত্রীসহ অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা স্কুলে ভাঙচুর চালিয়ে শিক্ষকদের মারধর করে একটি কক্ষে আটকে রাখে। বুধবার (১০ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, হামলায় নেতৃত্ব দেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমদ (প্রকাশ আদা ফরিদ) ও স্কুলের সাবেক সহকারী শিক্ষিকা কামরুন নাহার জিনু। তারা দীর্ঘদিন স্কুলটি নিয়ন্ত্রণ করলেও গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর স্কুল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে সরকার নির্ধারিত নতুন এডহক কমিটি দায়িত্ব নিলে এডভোকেট সাদ্দাম হোসেন নিশান সভাপতি এবং সহকারী শিক্ষক মো. ইউনুচ শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নেন।স্থানীয়রা জানান, ক্ষমতা হারিয়ে স্কুল থেকে সরে গেলেও কিছুদিন পরই ওই গোষ্ঠী পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। সম্প্রতি ‘প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির অপসারণ’ দাবিতে আন্দোলনের নামে বহিরাগত লোকজন এনে স্কুলে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালানো হয়।হামলার সময় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করা হয়। অনেকে নামতে না চাইলে তাদের মারধর করা হয়। হামলায় গুরুতর আহত হন দশম শ্রেণির ছাত্রী জন্নাতুল মাওয়া সাথী, শিক্ষক নুরুল ইসলাম বাবু ও শিক্ষক প্রতিনিধি মো. ইউনুচ। মো. ইউনুচকে পিটিয়ে একপর্যায়ে রুমে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলে কোনো বিরোধ থাকলে আলোচনা করে সমাধান করা যেত। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক-ছাত্রীদের পিটিয়ে আহত করার ঘটনা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।’স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি এডভোকেট সাদ্দাম হোসেন নিশান বলেন, ‘আওয়ামী লীগপন্থি একটি গোষ্ঠী স্কুলে ভাঙচুর চালিয়ে শিক্ষকদের পিটিয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করেছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’হামলায় নেতৃত্বে ছিলেন আদা ফরিদ, সালাহ উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মো. সেলিম, ছাত্রলীগ নেতা শাকিল, কৃষক লীগ নেতা আবু তালেবসহ ১৫–২০ জন। স্থানীয়রা জানান, তারা সবাই সাবেক এমপি ও বিতর্কিত নেতা জাফরের অনুসারী।চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে কিছু শিক্ষার্থী মানববন্ধন করেছে শুনেছি। তবে শিক্ষককে মারধরের ব্যাপারে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর