মালয়েশিয়ায় বিদেশি বিশেষজ্ঞ বা এক্সপ্যাট নিয়োগের প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের সংস্কার আনা হয়েছে। এক্সপ্যাট্রিয়েট এমপ্লয়মেন্ট পাস (ইপি) পেতে যেখানে আগে ৪০ দিন পর্যন্ত সময় লাগত, এখন মাত্র ১০ কার্যদিবসেই অনুমোদন মিলছে। এই যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে ইন্টিগ্রেটেড ফরেন ওয়ার্কার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইপিপিএএক্স) ও মাই ফিউচার জবস-এর এক্সপ্যাটস গেটওয়ে একীভূতকরণের ফলে, যা ১ জুলাই ২০২৫ থেকে কার্যকর হয়েছে।মানবসম্পদ মন্ত্রী স্টিভেন সিম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আগে নিয়োগকর্তাদের একাধিক প্ল্যাটফর্মে গিয়ে আবেদন করতে হতো। এখন শুধুমাত্র এক্সপ্যাটস গেটওয়ে ব্যবহার করেই সহজে ও দ্রুত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাচ্ছে। এতে সময় যেমন কমেছে, তেমনি দক্ষতাও বেড়েছে।তিনি জানান, এই গেটওয়েতে এখন দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত একীভূত হয়েছে। একটি হলো কর্মসংস্থান আইন ১৯৫৫-এর ধারা ৬০কে (যা ইপিপিএএক্স-এর আওতায় শ্রম দপ্তর পরিচালনা করে) এবং অন্যটি হলো মাই ফিউচার জবস-এর স্বীকৃতি পত্র (যা এসওসিএসও পরিচালনা করে)। ফলে এখন থেকে নিয়োগকর্তাদের আলাদা আলাদা প্ল্যাটফর্মে তথ্য জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।এছাড়া, আবেদনকারীরা রিয়েল-টাইমে আবেদন পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন এবং তথ্য সরাসরি সরকারি সিস্টেম থেকে যাচাই হওয়ায় জালিয়াতির ঝুঁকিও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহেই প্রায় ১০০টি কোম্পানি নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক জাকারিয়া শাহাবান, মালয়েশিয়া প্রোডাকটিভিটি কর্পোরেশনের উপ-মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ নোরজায়াদি তামাম এবং ট্যালেন্টকর্পের গ্রুপ সিইও থমাস ম্যাথিউ।উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুনে চালু হওয়া এক্সপ্যাটস গেটওয়ে একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যা সরকার অনুমোদিত ২৬টি সংস্থাকে একসাথে যুক্ত করে এককভাবে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এটি উন্নয়ন করেছে ট্যালেন্টকর্প।স্টিভেন সিম জানান, এই একত্রীকরণ নিয়োগকর্তাদের ব্যয় প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনবে এবং অংশীজনদের জন্য বছরে আনুমানিক ৫০ কোটি রিংগিত সাশ্রয় করতে সহায়তা করবে। প্রতিবছর মালয়েশিয়ায় প্রায় এক লাখ এক্সপ্যাট আবেদন জমা পড়ে, যারা মূলত বিভিন্ন প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, প্রকৌশল ও শিক্ষাবিষয়ক খাতে নিয়োজিত থাকেন।মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই ডিজিটাল রূপান্তর শুধু ব্যবসায়িক পরিবেশকে গতিশীলই করবে না, বরং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়াবে।তিনি আরও জানান, এই উন্নয়ন মালয়েশিয়াকে আইএমডি ওয়ার্ল্ড কম্পেটিটিভনেস র্যাঙ্কিংয়ে বড়সড় এগিয়ে নিয়েছে—গত বছরের ৩৪তম স্থান থেকে এ বছর দেশটি উঠে এসেছে ২৩তম স্থানে।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর