টাঙ্গাইল পৌর এলাকার পূর্ব আদালত পাড়ায় মাদকের টাকা না পেয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ও মাদক ব্যবসায়ী রাজিবের হামলায় ২ কিশোর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।সরেজমিনে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে মাহিদুল ইসলাম মৃদু (১৫) ও তার বড় ভাই মাশরাফি ইসলাম ইমন (২১) কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পূর্ব আদালত পাড়া বাসা থেকে বের হয়। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত জেলা ছাত্রলীগ নেতাও মাদক ব্যবসায়ী রাজীব (৪০) নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এক পর্যায়ে রাজীব তার বাসার সামনে কিশোরদের গতিরোধ করে জিজ্ঞাসা করে, ‘তোদের নাম কি এবং বাসা কোথায়?’ এরপর দুই ভাই চাকরি করে শুনেই তাদের কাছে নেশার টাকা দাবি করে। এ সময় দুই কিশোর মাহিদুল ইসলাম এবং মাশরাফি ইসলাম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে রাজীব তখন বলে, ‘হাটার সময় আমার বাসার দিকে তাকাইলি কেনো?’ এই বলেই এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় রাজীবের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন কিছু না জেনেই মাদকাসক্ত ছেলের সাথে মিলে ২ কিশোরকে মারতে থাকে। এক পর্যায়ে রাজীব তার কোমড়ে থাকা ছুরি দিয়ে মাহিদুল ইসলামকে আঘাত করলে মাহিদুল ইসলাম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং মাথায় কেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। পরে ২ কিশোরের মা খবর পেয়ে দৌড়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাকেও এলোপাতাড়ি আঘাত করে রাজীব ও তার বাবা। আহতদের চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এসে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আহতদের বাবা রবিন তালুকদার ওইদিনই টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।অন্যদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারের বাসার আশেপাশের মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আনোয়ার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং ছেলে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। এই ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে এলাকাবাসীকে মারধর এবং বিভিন্নভাবে নির্যাতন করেছেন। রাজীবের বাবার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার। আমার সামনেই ঘটনাটি ঘটেছে। মাদকাসক্ত ছেলের কথা তুলতেই আনোয়ার বলেন, ‘আর এ বয়সে পোলাপান একটু এরকম করেই।’ এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীর আহম্মেদ শনিবার (৫ জুলাই) বিকালে মুঠোফোনে জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।উল্লেখ্য, মাদকাসক্ত রাজীব টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। সেই দাপটেই এখনো বীরদর্পে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। পিএম
Source: সময়ের কন্ঠস্বর