ইরানে মার্কিন হামলার আগে ধারণা করা হচ্ছিল দেশটি সংঘাতে জড়ালে তেহরানের টার্গেটে পরিণত হবে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো। তাই ইরানে হামলার পর এই ধারণা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।ইরানে সরাসরি মার্কিন হামলার পর তেহরান কীভাবে এর জবাব দেয়, তার দিকে তাকিয়েও রয়েছে বিশ্ব। ইতোমধ্যে ইসরায়েলে হামলার পরিধি বাড়িয়েছে দেশটি, ছুড়েছে বহু ক্ষেপণাস্ত্র। ফলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিভিন্ন দেশে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ঘাঁটি এবং ঘাঁটিতে থাকা ৪০ হাজারের বেশি মার্কিন সেনা ঝুঁকিতে রয়েছে ।মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাঁটি রয়েছে কুয়েতে—৫টি। এ ছাড়া বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি রয়েছে সিরিয়া, ইরাক, জর্ডান, সৌদি আরব ও মিশরে।কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস অনুসারে, আমেরিকা এই অঞ্চলের কমপক্ষে ১৯টি স্থানে স্থায়ী এবং অস্থায়ী উভয় ধরনের সামরিক ঘাঁটির একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঘাঁটিটি রয়েছে কাতারে। এটির নাম আল উদেইদ বিমান ঘাঁটি। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ঘাঁটিতে বিপুলসংখ্যক মার্কিন সেনা রয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার বলে ধারণা করা হয়।বড় কোনো অভিযানের সময়ে এসব ঘাঁটিতে বাড়ানো হয় সেনার সংখ্যা। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে হামলা শুরুর পর ২০১১ সাল নাগাদ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল এক লাখের বেশি। আর ২০০৩ সালে ইরাক হামলার পর ২০০৭ সালের মধ্যে এসব ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাসংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি।মধ্যপ্রাচ্যে যে কারণে মার্কিন সেনাসুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নয়, বরং আধিপত্য বিস্তার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার নামে মধ্যপ্রাচ্যে ঘাঁটি গেড়েছে মার্কিনিরা। দীর্ঘ সময় ধরে ইরাকের মতো কিছু দেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করলেও এখন পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে অঞ্চলজুড়ে, তবুও রয়ে গেছে মার্কিন ঘাঁটিগুলো।অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র জর্ডানে শত শত মার্কিন প্রশিক্ষকও অবস্থান করছেন। তারা বছরজুড়ে ব্যাপক মহড়ার আয়োজন করে থাকেন। কাতার ও ইউএইতে মূলত দেশ দুটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মার্কিন সেনা রাখা হয়েছে। তারা দেশ দুটির সেনাদের প্রশিক্ষণও দেন।আরব আমিরাত ও কাতারে মার্কিন সেনাদের রাখার আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, অঞ্চলটিতে সামরিক কোনো অভিযানে প্রয়োজন হলে মার্কিন সেনাদের থেকে সহায়তা নেওয়া।এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর