পাবনার ঈশ্বরদীর সাড়া ঘাটের বালিমহল নিয়ে আধিপত্য বিস্তারে আওয়ামী লীগের স্বশস্ত্র গোষ্ঠীর একের পর এক প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া যেন চলছেই। এতে ব্যাপক নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছে স্থানীয়রা। গণমাধ্যমে ফিল্মি স্টাইলে নদীপথের রাজা ‘নামখ্যাত’ কাকন বাহিনীর একাধিক মহড়ার সংবাদ প্রকাশের পরও চোখে পড়ার মতো নেই প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ। স্থানীয়দের দাবি, নিরব দর্শকের ভূমিকায় প্রশাসন। দ্রুত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও নিরাপত্তার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী, কৃষক ও জেলেরা।রবিবার (২২ জুন) দুপুরে উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের সাড়াঘাট এলাকায় এই সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব দাবি জানান। এ সময় তাদের পক্ষে ও বৈধ ইজারা পেয়েও বালিঘাট পরিচালনায় বারংবার বাধা সৃষ্টির অভিযোগ করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সাবেক সদস্য সচিব মেহেদী হাসান।জানা গেছে, গত ২২ মে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক সুলতান আলী বিশ্বাস টনি ও তার সমর্থকরা সরকারি অনুমোদন নিয়ে বালি উত্তোলন করছিলেন। সেদিন আওয়ামী সমর্থিত কাকন বাহিনীর লোকজন হামলা ও গোলাগুলি করে ৭-৮ জনকে গুলিবিদ্ধ করে। এ ঘটনার ঠিক দুদিন পরই পুনরায় স্থানীয় কৃষকদের চরের ভিতরে বেধড়ক পিটিয়ে ১০ জন কৃষককে আহত ও দুটি গরু লুট করে পিকনিক করেন তারা। শুধু তাই নয়, গত ৫ জুন কাকন বাহিনীর একটি গ্রুপ প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এসে বালির খোলায় হামলা, ভাঙচুর ও গুলিবর্ষণ করে টাকা লুট করে নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বালি ব্যবসায়ী, কৃষক ও জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘাটে বৈধ ইজারাদার হওয়ার পরও আমরা আওয়ামী লীগের স্বশস্ত্র গোষ্ঠীর বারংবার অস্ত্রের মহড়ায় ব্যবসা, কৃষিকাজ ও নদীতে মাছ ধরতে পারছি না। পাশের লালপুরের আওয়ামী সমর্থিত কাকন বাহিনীর লোকজন মাঝে মধ্যেই পদ্মা নদীতে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে। এর আগে গত ৫ জুন সাড়া ঘাটে বালিমহলের নিয়ন্ত্রণ নিতে ফিল্মি স্টাইলে অস্ত্রের মহড়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ঘটনায় মামলা হলেও অস্ত্রধারীদের এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। সর্বশেষ গতকাল শনিবার তারা আবারও স্বশস্ত্র মহড়া দিয়েছে। ঘাটে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো ভূমিকায় যায়নি।ঘাটের সরকারি ইজারাদার মেহেদী হাসান বলেন, কাকন বাহিনীর অস্ত্রের মহড়া, গুলিবর্ষণ, লুটপাট ও মারধরের একাধিক ঘটনায় একাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলার পর থেকেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নামে মিথ্যা অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগ করে যাচ্ছে কাকন বাহিনীর লোকজন। আমাদের ঘাট পরিচালনায় বাধা সৃষ্টি করছে। নৌ পুলিশ ও থানা পুলিশের নিরব ভূমিকা স্থানীয় এসব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে।তবে এসব ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আব্দুন নুর বলেন, ‘অভিযোগকারীরা তো অনেক রকম কথা বলতে পারে যার কোনো ভিত্তি নেই। সেখানে আমাদের পুলিশ মোতায়েন করা আছে। তবে নদীর মধ্যে মহড়া হচ্ছে এমন ভিডিও ফেসবুকে দেখেছি, তবে তাদের হাতে কোনো অস্ত্র লক্ষ্য করা যায়নি। আর নদীর মধ্যকার বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব নৌ পুলিশের। আপনারা তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’ এ বিষয়ে ঈশ্বরদীর লক্ষীকুণ্ডা নৌ পুলিশের ইনচার্জের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর