ময়মনসিংহের ফুলপুরে যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রে বাসের ধাক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে আটজনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া তারাকান্দায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের সংর্ঘষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। এ নিয়ে জেলায় পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২০ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে ফুলপুর পৌর শহরের কাজিয়াকান্দা চরপাড়া ও সন্ধ্যায় তারাকান্দার কোধালধর এলাকায় যাত্রীবাহী মাহেন্দ্রে বাসের ধাক্কায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। আহতদের মমেক হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সহকারী পরিচালক মো. মাসুদ সরর্দার। এ ছাড়া গুরুতর আহত আরও দুইজন মমেক হাসপাতালে চিকিৎসধীন অবস্থায় মারা যান। কিন্তু হতাহতদের নামপরিচয় এখনো জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিহত একজন হলেন ধোবাউড়া থানার বরাটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের স্ত্রী জবেদা খাতুন (৮৫) ও অপরজন ফুলপুর থানার মদিপুর সুতারপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল হাসান। এদিকে ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম সীমা গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে ছয়জনের পর মমেক হাসপাতালে আরও দুইজনের মারা যান। তবে তাদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি বাস হালুয়াঘাটের দিকে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে কাজিয়াকান্দা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রর সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন আরও কয়েকজন।এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। মমেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিক উদ্দিন বলেন, ফুলপুরে বাস ও মাহেন্দ্র দুর্ঘটনায় মমেক হাসপাতালে আহত ছয়জন ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে হাসপাতালে আসার পরেই অজ্ঞাত একজন এবং রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে পারভেজ (৪৫) নামের মাহেন্দ্র চালক মারা যান। এর আগে এদিন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তারাকান্দা উপজেলার কোদালধর বাজার-সংলগ্ন হিমালয় ফিলিং স্টেশনের সামনে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলেই আটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হন।এ ঘটনায় আহত অটোরিকশার চালকসহ আরও তিন যাত্রীকে মমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. টিপু সুলতান বলেন, একটি অ্যাম্বুলেন্স হালুয়াঘাট যাচ্ছিল। এ সময় ময়মনসিংহগামী একটি যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশার সঙ্গে ঘটনাস্থলে মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যাবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন ওসি। মমেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিক উদ্দিন গণমাধ্যমকে আরও বলেন, তারাকান্দায় অটোরিকশার সঙ্গে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনাস্থলেই দুইজন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ জন মারা যান। এ নিয়ে তারাকান্দা দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। তবে এখনো নিহত অপর দুইজনের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।এদিকে পৃথক দুই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলে এবং রাতেই ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আখতার উল আলম। তিনি বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক দুটি ঘটনারই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুর্ঘটনার শিকার সিএনটি অটোরিকশা, বাস এবং যানগুলোর দুমড়েমুচড়ে যাওয়া অবস্থা দেখে মনে হয়েছে বেপরোয়া গতিই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।এবি
Source: সময়ের কন্ঠস্বর