অত্যাধিক প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। যাঁরা নিয়মিত মাছ-মাংস খেয়ে থাকেন, তাঁদের ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। অত্যধিক মদ্যপানও ইউরিক অ্যাসিডের কারণ হতে পারে। আর ইউরিক অ্যাসিড বাড়লেই গাঁটের ব্যথা অনিবার্য। তবে মনে রাখবেন, শরীরের গিরায় গিরায় ব্যথা, সারা শরীর ব্যথা বা কামড়ানো ইত্যাদি ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার লক্ষণ নয়। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ৩.৫ থেকে ৭.২ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। এর বেশি হলে তা শরীরে জমে গিয়ে বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা ও প্রদাহ তৈরি করে।অনেকেই ভাবেন, ইউরিক অ্যাসিড কমানোর একমাত্র উপায় ওষুধ খাওয়া। তবে খাদ্যাভ্যাসের সামান্য পরিবর্তনেই এই সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বিশেষ করে কিছু নির্দিষ্ট ড্রাই ফ্রুটস রয়েছে, যেগুলো নিয়মিত খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা যায়।খেজুর: খেজুরে থাকে উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও পটাসিয়াম, যা হজম শক্তি বাড়ায় ও পেশির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর ফ্ল্যাভোনয়েড ও ক্যারোটিনয়েড উপাদান প্রদাহ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে, যা ইউরিক অ্যাসিডজনিত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক-দু’টি খেজুর খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তিও পাওয়া যায়।কাজু: কাজু বাদাম কেবল স্বাদের জন্যই নয়, উপকারিতার দিক থেকেও অসাধারণ। এতে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ফলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রাও থাকে নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্ক অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড দূর করতে সহায়ক। কাজু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে, হজমশক্তি বাড়ে এবং হাড়ের শক্তি বজায় থাকে।পেস্তা: পেস্তা বাদাম ইউরিক অ্যাসিড কমাতে অত্যন্ত উপকারী। এতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা হজমে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে। সেইসঙ্গে এতে থাকা লুটেইন ও জিক্সানথিন নামের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চোখের জন্যও উপকারী। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।কাঠবাদাম: প্রতিদিন কিছু কাঠবাদাম খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা খনিজ উপাদান। চিকিৎসকদের মতে, কাঠবাদাম ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে।আখরোট: ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ আখরোট শরীরে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই বাদামে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান গাউট বা জয়েন্টে প্রদাহজনিত ব্যথা কমাতে কার্যকর। এটি শুধু ইউরিক অ্যাসিড নয়, হার্টের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে এবং মানসিক চাপ কমায়।ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তবে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যদি এই পাঁচটি ড্রাই ফ্রুটস যুক্ত করা যায়, তাহলে প্রাকৃতিকভাবেই তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। শুধু ওষুধে নয়, সচেতন খাদ্যাভ্যাসেও লুকিয়ে রয়েছে স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি।এসকে/এইচএ
Source: সময়ের কন্ঠস্বর