গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে বরগুনার আমতলী উপজেলায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলকপাটগুলো দিয়ে পর্যাপ্ত পানি নিস্কাশন না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কৃষকরা খেত প্রস্তুত করে ও বীজ তুলে রাখলেও রোপণ করতে পারছেন না। এতে চলতি মৌসুমে আউশ ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমতলী উপজেলায় ৭ হাজার ৫৭১ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ে বীজ রোপণ সম্ভব না হলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।আমতলী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিনে ৮৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক কৃষক জমি প্রস্তুত রেখেছেন এবং বীজ তুলে রেখেছেন, কিন্তু খেতের পানি সরে না যাওয়ায় তারা রোপণ করতে পারছেন না।বুধবার বিকেলে আমতলী উপজেলার কুকুয়া, চাওড়া, আঠারোগাছিয়া ও গুলিশাখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধ খেতে কৃষকরা উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন।হলদিয়া ইউনিয়নের তক্তাবুনিয়া গ্রামের কৃষক শিবলী শরীফ বলেন, ‘জমি তৈরি করেছি, বীজও তোলা, কিন্তু পানিতে খেত তলিয়ে থাকায় বীজ রোপণ করতে পারছি না। এভাবে পানি থাকলে বীজও পঁচে যেতে পারে।’গুলিশাখালী ইউনিয়নের বাইনবুনিয়া গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে বীজ রোপণ করতে পারছি না। প্রতিদিনই ক্ষতি বাড়ছে।’একই কথা বলেন কুকুয়া গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া। তিনি বলেন, ‘জমি চাষ করে রেখেছি, বীজও হাতে আছে, কিন্তু জলকপাট দিয়ে পানি না নামায় খেত এখনও পানিতে ডুবে আছে। কবে পানি নামবে, তা আল্লাহ জানেন।’এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ রাসেল বলেন, ‘টানা বৃষ্টির কারণে অনেক জমিতে পানি জমে আছে। এতে বীজ রোপণে বিলম্ব হচ্ছে। সময়মতো রোপণ সম্ভব না হলে আউশ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে।’স্থানীয় কৃষকদের দাবি, দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। না হলে এই এলাকার আউশ ধানের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর