অপরিপক্ক তিলক্ষেত তলিয়ে গিয়ে এতদিনে গাছ পচে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। ফলে চরাঞ্চলে রোপন করা তিল উঠিয়ে ফেলছেন কৃষকরা। এছাড়াও ছোট ছোট পাট গাছও তলিয়ে গেছে অনেকের। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা।উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিরাজগঞ্জের চৌহালীর প্রমত্তা যমুনা নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে জেলার চৌহালী উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলের কৃষকদের দুশ্চিন্তা বেড়ে চলছে।পানি বৃদ্ধির ফলে ইতোমধ্যে উপজেলার উমারপুর, ঘুশুরিয়া, কাঁঠালিয়া, পয়লা ও ঘোড়জানের কাউলিয়া ও করিতলা ইউনিয়নের যমুনা নদীর দুই পাড়ের অসংখ্য ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।অপরিপক্ক তিলক্ষেত তলিয়ে গিয়ে এতদিনে গাছ পচে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। ফলে চরাঞ্চলে রোপন করা তিল উঠিয়ে ফেলছেন কৃষকরা। এছাড়াও ছোট ছোট পাট গাছও তলিয়ে গেছে অনেকের। এ নিয়ে চলতি মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। তীব্র পানির স্রোতে চরাঞ্চলের ফসলি জমিগুলো ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পানি কমা শুরু করলে এ ভাঙন আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।ঘুশুরিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুস ছামাদ বলেন, ‘নদীতে কয়েক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের বিভিন্ন নিচু জায়গায় পানিতে ভরে গেছে; তলিয়ে যাচ্ছে তিল পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল।‘এবার কয়েক বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছি। পানি আসায় পরিপক্ব হওয়ার আগেই তুলে ফেলতে হয়েছে। যার কারণে চলতি মৌসুমে তিল চাষে অনেকটা লোকসানের মুখে পড়তে হবে।’কাঁঠালিয়া গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন সরকার বলেন, ‘চরাঞ্চলে নতুন পানি প্রবেশ করেছে। তবে, (সোমবার) কিছুটা পানি কমলেও নিচু জমির ফসলগুলো তলিয়ে গেছে। তার মধ্যে তিল ও ছোট ছোট পাট গাছ বেশি ক্ষতি হয়েছে। অনেকেই অপরিকল্পিত তিল তুলে ফেলছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি পেলে তিল ও পাট চাষে লোকসান হবে কৃষকের। এছাড়া অন্যান্য ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছি আমরা।’জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে গত ৫ দিনে সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীতে ২৮৭ সেন্টিমিটার ও চৌহালীর পয়েন্টে ৩০২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। যমুনায় দ্রুতগতিতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার উমারপুর ইউনিয়নের অধ্যুষিত তিল, পাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকেরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে।সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘উজানের ঢল ও বৃষ্টির কারণে যমুনায় পানি বাড়ছে। দুই-একদিন পানি কিছুটা বাড়তে পারে। তারপর থেকে পানি স্থিতিশীল হয়ে কমতে শুরু করবেনদীতে পানি কমলেও তলিয়ে যাওয়া তিল গাছ পচে গেছে। তবে, কৃষকদের সঙ্গে উপজেলা কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে বলে জানান তিনি।এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.সাব্বির আহমেদ সিফাত জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর জমিতে তিল চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে হঠাৎ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪ হেক্টর জমির অপরিপক্ক তিল পানিতে তলিয়ে পচে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এছাড়াও পাট চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কমপক্ষে ২ হেক্টর জমি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর