বান্দরবানের আলীকদমে পাহাড়ি ঢলে ঝিরির পানিতে ভেসে যাওয়া এক পর্যটকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। নিহত পর্যটকের নাম জুবাইরুল ইসলাম (২৭)।বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোরে আলীকদমের মাতামুহুরী নদী থেকে জুবাইরুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও মো. হাসান ও স্মৃতি আক্তার নামে দুইজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। নিহত ব্যক্তি ও নিখোঁজ দুজন উপজেলার দুর্গম কিস্টং পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোরে জেলার আলীকদম উপজেলা সদর বাজার এলাকায় মাতামুহুরী নদীতে ভাসমান অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পান। তাঁরা থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে। লাশের সঙ্গে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী ওই ব্যক্তির নাম জুবাইরুল ইসলাম। বাড়ি নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার ধলইতলা পাচুরিয়া গ্রামে। মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ জানতে পারে, আলীকদমে একটি পর্যটক দলের এক নারীসহ তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। তাঁদেরই একজন নিহত জুবাইরুল ইসলাম।বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা সদরে ফিরে আসা পর্যটক দলের সদস্য নরসিংদীর রাহাত হোসেন জানান, তাঁরা ৩৩ জনের একটি গ্রুপ ট্যুর এক্সপার্ট নামের একটি সংস্থার ব্যবস্থাপনায় গত ৮ জুন আলীকদমে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৫ দিনের জন্য বেড়াতে আসেন ১১ জন, বাকি ২২ জন ৩ দিনের জন্য এসেছিলেন। ৮ জুন বিকেলে ৩৩ জনের সবাই আলীকদমের ক্রিস্টং পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা দিয়ে রাত ১১টায় খেমচংপাড়ায় পৌঁছান। সেখান থেকে ক্রিস্টং পাহাড় ও আশপাশে ঘুরে ৩ দিনের ভ্রমণসূচি শেষে ২২ জনের দলটি গতকাল বুধবার ফিরে আসছিল। আসার পথে বিকেল চারটার দিকে শামুক ঝরনা নামের একটি ঝিরি পার হওয়ার সময় হঠাৎ প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। দলের ১৯ জন ঝিরি পার হয়ে গেলেও ট্যুর এক্সপার্ট গ্রুপের দুই সহপরিচালক স্মৃতি আক্তার ও মো. হাসান এবং পর্যটক জুবাইরুল ইসলাম ভেসে যান।পর্যটক রাহাত হোসেন আরও জানান, বৃষ্টিতে হঠাৎ ঝিরিতে পাহাড়ি ঢল নামে। ঝরনার পানি কমে গেলে তাঁরা খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, স্মৃতি আক্তার, হাসান ও জুবাইরুল ইসলামের খোঁজ নেই। তাঁদের কী হয়েছে, তাঁরা জানেন না। তিনজনকে না পেয়ে তাঁরা ১৯ জন সারা রাত ঝরনা এলাকায় ছিলেন। সকালেও খোঁজাখুঁজি করে কোনো হদিস পাননি। আলীকদম সদরে ফিরে জুবাইরুল ইসলামের লাশ পাওয়া গেছে জানতে পেরে ধারণা করছেন, তিনজনই পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছেন। এক্সপার্ট গ্রুপের প্রধান বর্ষার নেতৃত্বে ১১ জনের পর্যটক দলটি এখনো পাহাড়ে রয়েছে বলে রাহাত হোসেন জানিয়েছেন। নিখোঁজ স্মৃতি আক্তারের বাড়ি ময়মনসিংহ এবং হাসানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে বলে জানা গেছে।এই বিষয়ে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, এখনো নিখোঁজ থাকা দুজনকে উদ্ধারে কাজ করা হচ্ছে। ১ জনের উদ্ধার হয়েছে, বাকী দুইজনের কী হয়েছে, ফিরে আসা ১৯ জন পর্যটকরা সঠিক বলতে পারছেন না। কারণ, প্রবল বৃষ্টিতে তাঁরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। এনআই
Source: সময়ের কন্ঠস্বর