বঙ্গোপসাগরে প্রজনন মৌসুমের ৫৮ দিনের মৎস্য অবরোধ শেষ হবে আজ মধ্যরাতে। দীর্ঘদিন মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার পর ১১ জুন বুধবার মধ্যরাত থেকে ইলিশ শিকারে সমুদ্রে যাবে জেলেরা। শেষ সময়ে চলছে নানা প্রস্তুতি। সরগরম হয়ে উঠেছে জেলে পল্লী ও মৎস্যবন্দরগুলো। দক্ষিণাঞ্চলের বৃহৎ মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুরসহ কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও জেলে পল্লীগুলোতে কর্মতৎপরতা ফিরে আসতে শুরু করেছে।বরফকল গুলোতে বরফ উৎপাদনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। সমুদ্রে ৫৮ দিনের অবরোধের কারণে কষ্টে জীবন যাপন করা জেলেদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। সমুদ্রে ফিরে গিয়ে ইলিশ শিকার করে নিয়ে আসবে তীরে, এমন আশা নিয়ে সমুদ্রে যাবে জেলেরা। সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার মৎস্য আড়ৎগুলোতে নতুন করে ধোয়া মোচার কাজ চলছে। কুয়াকাটা সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলে পল্লীগুলোতে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছে মৎস্যজীবীরা। মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর-কুয়াকাটাসহ সমুদ্র উপকূলের জেলে পল্লীগুলো আবার দীর্ঘ সময় পর সরগরম হয়ে উঠেছে।কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ও আলীপুর-মহিপুর মৎস্য আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে, গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারে যাওয়া ট্রলারগুলোতে জাল, গেড়াফি, তেল, চাল, ডালসহ মৎস্য উপকরণ ট্রলারে বোঝাই করে অপেক্ষা করছে। অপেক্ষা করছে কখন শেষ হবে সময় আর মধ্যরাতে বন্দর ছেড়ে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে যাবে মাছ শিকারে।উল্লেখ্য, ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে সরকার। কিন্তু জেলেরা দাবি করে আসছিল, ‘আমাদের দেশে যখন অবরোধ চলে, তখন ভারতীয় জেলেরা আমাদের সীমানায় এসে মাছ ধরে।’ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের সঙ্গে মিল রেখে এই অবরোধ করার জন্য। কিন্তু ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় এ অবরোধের বিরোধিতা করে আসছিল জেলেরা। তাই জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৪ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।কুয়াকাটা আড়ৎদার সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘প্রজনন মৌসুমের ৫৮ দিন অবরোধ শেষে জেলেরা ১১ জুন মধ্যরাতে সমুদ্রে ইলিশ শিকারে রওয়ানা হয়ে যাবে।’ অবরোধের ৫৮ দিন জেলেরা অনেক কষ্টে জীবনযাপন করেছেন।এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘সরকারের নির্দেশক্রমে ৫৮ দিনের অবরোধ শেষ হবে ১১ জুন।’ এই অবরোধের ফলে সমুদ্রে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ সুষ্ঠুভাবে প্রজনন করতে পেরেছে বলে আমরা আশা করি। অবরোধ চলাকালীন সময়ে জেলেদের প্রণোদনার চাল সুষ্ঠুভাবে পৌঁছে যেতে পেরেছে। তিনি আরও বলেন, ‘মূলত দুটি কারণে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রজনন সুবিধায় যাতে মাছ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে। আর অপরটি হলো- ছোট মাছকে বড় হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। যার জন্য বর্তমানে বড় আকারের ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়বে। এবারের আমাদের অবরোধ ফলপ্রসূ হয়েছে। এবছর সমুদ্রে প্রচুর মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়বে বলে আশা করি।’এসআর
Source: সময়ের কন্ঠস্বর